শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: শিক্ষা খাত নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের তীব্র প্রভাব এখনও পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে অনুভূত হচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্যানেল বাতিল করায় প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী তাঁদের চাকরি হারিয়েছেন। এই রায়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে এবং তারা ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বেতন পাবেন। কিন্তু অশিক্ষক কর্মীরা তেমন ভাগ্যবান নন। অনেকেই এখন চাকরিহারা, পরবর্তী কী যে হবে সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্টতা নেই।
শিক্ষা বিভাগ এই ভয়াবহ সংকটের কথা স্বীকার করলেও, কর্মকর্তারা বলছেন যে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পরে তাদের করার মতো খুব বেশি কিছু নেই। ফলস্বরূপ, স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) কে সম্পূর্ণ নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি সবার ভালো লাগেনি। পূর্বে নির্বাচিত কিন্তু এখন অযোগ্য প্রার্থীদের একটি বিশাল সংখ্যা আবার পরীক্ষায় বসতে অনিচ্ছুক। এর প্রতিবাদে, সমাধানের আশায় বিকাশ ভবনের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। বিক্ষোভ সত্ত্বেও, এসএসসি নতুন করে নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যেই একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
কী কী পরিবর্তন আসতে পারে?
শিক্ষা বিভাগের সূত্রগুলি মনে করছে যে এবার বেশ কিছু নিয়ম এবং পদ্ধতি পরিবর্তন হতে পারে। যেমন, একটি বড় পরিবর্তন বিবেচনা করা হচ্ছে পরীক্ষা পদ্ধতিতে। প্রার্থীরা এখনও আগের মতোই ওএমআর শিটে পরীক্ষা দেবেন, তবে উত্তরপত্রের কার্বন কপি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। পরীক্ষার পরে এই কপি প্রার্থীদের ফেরত দেওয়া হবে। একই সময়ে, কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে কোনও বিরোধ বা বিভ্রান্তি এড়াতে শারীরিক এবং স্ক্যান করা ওএমআর শিটের সংরক্ষণের সময়কাল বাড়ানোর পরিকল্পনাও করছে।
আরও পড়ুন: কথা রাখলেন মমতা, চাকরিহারাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নবান্নের
অতিরিক্তভাবে, নিয়োগ প্রক্রিয়ার অন্যান্য দিকগুলিও সংশোধন করা যেতে পারে। বর্তমানে, শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল এক বছরের জন্য বৈধ থাকবে, তবে এসএসসি সম্ভবত সেই বৈধতা আরও ছয় মাস বাড়াবে। সাক্ষাৎকার কীভাবে পরিচালিত হয় তাতে পরিবর্তন আনার কথাও আলোচনা করা হচ্ছে। প্রক্রিয়াটিকে আরও স্বচ্ছ করতে এবং ব্যবস্থার প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এই সমস্ত পদক্ষেপ করা হতে পারে।