DA নিয়ে আর বঞ্চনা নয়! সময়সীমা শেষের আগেই রাজ্যকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি

WB 5th Pay Commission DA Arrear Update

DA নিয়ে আর বঞ্চনা নয়! সময়সীমা শেষের আগেই রাজ্যকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি

Srijita Ghosh

Published on:

শ্রীজিতা ঘোষ, কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA)-র ২৫ শতাংশ পরিশোধের সময়সীমার শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এখনও পর্যন্ত সেই অর্থ (WB 5th Pay Commission DA Arrear Update) মেটানো তো দূরের কথা, বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে রাজ্য সরকার, এমনটাই অভিযোগ কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর।

সাধারণ সম্পাদক কী বলছেন?

কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় (Malay Mukhopadhyay) বলেছেন, ‘আজ পর্যন্ত রাজ্য সরকার এই নিয়ে একটিও কথা বলেনি। হাতে আছে মাত্র দু’দিন – ২৬ ও ২৭ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার)। শুক্রবার (২৮ জুন) রথযাত্রা (Ratha Yatra) উপলক্ষে সরকারি ছুটি হলেও, আমরা সেদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’

আইনি পদক্ষেপের পথে সংগঠন

রাজ্য সরকার সময়সীমা না মানলে রাজ্যের অর্থসচিব ও মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ, এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করার কথা জানানো হয়েছে। এক শীর্ষ সংগঠন নেতা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর ঔদ্ধত্য দেখে আমরা বিস্মিত। আইন অমান্য করলে তার পরিণতি তাঁকে বুঝতেই হবে।’

আইনজীবীদের বক্তব্য

আইনজীবীরা বলছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই অন্তত ২৫% বকেয়া ডিএ পরিশোধ না হলে, আদালতের অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে। এতে রাজ্যের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সরকার কি ঋণ নিয়ে বকেয়া মেটাতে চাইছে?

একাংশ দাবি করছে, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ১০,৫০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে, যা দিয়ে বকেয়া DA মেটানো সম্ভব। এই তথ্য সামনে এলেও, সরকারি ভাবে এখনও কোনও বিবৃতি মেলেনি।

বিরোধীদের মত

বিরোধীরা বলছেন, কোষাগারে অর্থ রয়েছে, ঋণ লোকদেখানো। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের মতে, ‘এই ২৫% DA মেটাতে যে পরিমাণ অর্থ দরকার, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা নবান্নের কোষাগারে আছে। কিন্তু রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ‘অর্থসংকটের’ নাটক করছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই এই ঋণের গল্প সাজানো হয়েছে।’ তাঁদের মতে, এভাবে জনমত তৈরি করলেও দাবির থেকে কর্মচারীরা পিছিয়ে আসবেন না।

সংগঠনের হুঁশিয়ারি

মলয় মুখোপাধ্যায়ের স্পষ্টভাবে বলেন, ‘রাজ্য সরকারের ঔদ্ধত্য আমরা ভাঙব। ডিএ দিতেই হবে। এটা কোনও দয়া নয়, এটা আমাদের অধিকার।’

কী হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপ?

যদি সরকার সময়মতো ২৫% বকেয়া ডিএ দিয়ে দেয়, আদালত অবমাননার অভিযোগ যেমন এড়ানো যাবে, তেমনই রাজনৈতিক চাপও কমবে। কিন্তু সরকার নির্ধারিত সময়সীমা যদি লঙ্ঘন করে সুপ্রিম কোর্টে অবমাননার মামলা করা হবে এবং প্রশাসনিক সংকটও দেখা দেবে। যদি DA না পাওয়া যায় তাহলে কর্মচারীদের আন্দোলন আরও জোরদার হবে, এরফলে সকল পরিষেবা বিঘ্নিত হবে।

DA সংক্রান্ত এই পরিস্থিতি এখন প্রশাসনিক নির্দেশ মানার বিষয় নয়, এটি হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রীয় কর্তব্য বনাম কর্মচারীদের অধিকারের এক সংঘর্ষ। সময় ফুরিয়ে আসছে, আর রাজ্য সরকারের নিরবতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। পরবর্তী দুই দিনই বলে দেবে, এই সংঘাত আইনি পথেই গড়াবে! নাকি সমাধানের কোনও পথ খুলবে।

সঙ্গে থাকুন ➥