শ্রীজিতা ঘোষ, কলকাতা: অবশেষে খিদিরপুর মেট্রো স্টেশন নিয়ে জট কাটলো, রাজ্য সরকার আলিপুর বডিগার্ড লাইনে জমি ব্যবহারের জন্য অনুমতি (NOC) দিল বৃহস্পতিবার। এক জাতীয় সংবাদ মাধ্যম আগেই জানিয়েছিল, ১৪ কিমি দীর্ঘ জোকা-এস্প্লানেড (Joka Esplanade Metro Update) মেট্রো লাইনে খিদিরপুর স্টেশন (Kidderpore Metro) নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল (যা পরে আরও ১.৬ কিমি বাড়িয়ে ইডেন গার্ডেন্স পর্যন্ত যাবে)। গত দুই বছর ধরে ৫ কিমির ভূগর্ভস্থ অংশের কাজ পুরোদমে চললেও — সেখানে টানেল খোঁড়ার যন্ত্র (TBM) ছিল এবং ভিক্টোরিয়া, পার্ক স্ট্রিট ও এসপ্লানেড স্টেশনের কাজ চলছিল (West Bengal Metro update)। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার রোডের নিচে খিদিরপুর স্টেশনের জমিতে ঢোকার অনুমতি পাওয়া যাচ্ছিল না।
রাজ্য সরকার মেট্রো রেলওয়েকে কী জানিয়েছে?
তিন বছরের বেশি সময় পর অবশেষে বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার মেট্রো রেলওয়েকে জানিয়েছে যে, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত মেনে পুলিস ব্যারাকের ভেতরে কাজ করা যেতে পারে। পার্পল লাইনের নির্মাণ সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (RVNL)–কে বডিগার্ড লাইনের পাশে থাকা সীমানা প্রাচীরের কাছে ৮৩৭ বর্গমিটার জমি দেওয়া হবে ডায়মন্ড হারবার রোড চওড়া করা, ইউটিলিটি সরানো এবং ভেন্টিলেশন শ্যাফট, আগুন থেকে বাঁচার জন্য জরুরি নির্গমন পথ তৈরি করা হবে। RVNL অস্থায়ীভাবে আরও ১,৭০২ বর্গমিটার জমি ব্যবহার করতে পারবে বডিগার্ড লাইনের ভেতরে। একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘এই জমি তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।’
মেট্রো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, বডিগার্ড লাইনের ভেতরের ধোবি লাইনস (পুলিসের কাপড় ধোয়ার জায়গা) যেন মূলত নির্মাণ এলাকার বাইরে রাখা হয়। নিরাপত্তার কারণে যে অংশগুলো সরাতে হবে, সেগুলো কাজ শেষ হলে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে।
জোকা-এস্প্লানেড লাইনের মানচিত্র
৬ জুন জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছিল, খিদিরপুর স্টেশনের জন্য জমি না পাওয়ায় মেট্রো রেলওয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটিকে জোকা-এস্প্লানেড (Joka Esplanade Metro) লাইনের মানচিত্র থেকে বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছে। একটি বৈঠকে (প্রজেক্ট মনিটরিং গ্রুপ–PMG) রাজ্য জানিয়েছিল, ‘এই জমির অনুমোদন এখনও আইনের গেঁড়াকলে ঝুলে আছে। রেল মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে খিদিরপুর স্টেশন বাদ দিয়েই লাইন তৈরি করা যেতে পারে।’
নতুন স্টেশন পরিকল্পনা
এরপর মেট্রো সংস্থা রাজ্যকে জানায়, তারা খিদিরপুর স্টেশন বাদ দিচ্ছে। তবে ২১ জুন মুখ্যসচিব মনোজ পান্তের কক্ষে হওয়া একটি বৈঠকে বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখা হয়। মেট্রোকে একটি নতুন স্টেশন পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়।
বর্তমানে এই লাইন জোকা থেকে মজেরহাট পর্যন্ত ৭.৭ কিমি উঁচু পথে চলছে। সর্বশেষ উঁচু স্টেশন — মোমিনপুর — এর নির্মাণ শুরু হয়ে গেছে।