জীবনের ৩৬ টি বসন্ত পার করে ৩৭ বছরে পা দিলেন বলিউড সুপারস্টার অর্জুন কাপুর। দেখতে দেখতে ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ ১০ বছর পার করে দিলেন তিনি। যশ রাজ ফিল্মসের ইশকজাদে ছবি দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন বলি সুন্দরী পরিনীতি চোপড়া। সম্প্রতিই একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেতা নিজের প্রথম ছবির স্মৃতি হাতড়ে বের করে আনলেন কিছু অজানা কথা। জানা গেলো পরিচালক নাকি তাকে ছবিটি অফারই করতে চাননি। কিন্তু ঠিক কী কারণে প্রত্যাখিত হয়েছিলেন তিনি!
একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে বলিউড তারকা অর্জুন কাপুর নিজের কেরিয়ারের প্রথম পর্যায়ে ডুব মারেন। স্মৃতির পাতা থেকে তুলে আনেন বেশ কিছু অজানা তথ্য। বনি কাপুরের ছেলে হয়েও কীভাবে রিজেকশনের মুখে পড়তে হয়েছে তাকে, এইদিন তাই ব্যক্ত করলেন তিনি। অভিনেতার কথায়, বাবার পরিচয় কাজে লাগিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখাতে চাননি তিনি। অর্জুন চেয়েছিলেন নিজের যোগ্যতায় বলিউডে জায়গা করে নেবেন। সেই কারণেই বাবা বনি কাপুর ইন্ডাস্ট্রির এক প্রভাবশালী নাম হওয়া সত্ত্বেও অডিশন দিতে যেতেন তিনি। এভাবেই এক অডিশনে আদিত্য চোপড়া তাকে জানায় তার মধ্যে নায়ক বা হিরো হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
অভিনেতার কথায়, বাবার হাত ধরে ডেবিউ করতে চাইনি। আমি মনে করি, কোথাও, নিজেকে পরীক্ষা করাটা জরুরি। আমার চারিপাশে সবসময় একটা নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল। তাই আমি অডিশন দিতে গিয়েছিলাম। সেই সময় আদিত্য চোপড়া স্যার আমার ছবি দেখে বলেছিলেন, এ অভিনেতা হতে পারবে না। ও মুখ্য চরিত্র হতে পারবে না।’ এরপরই জেদ চেপে যায় তার। দিনরাত পরিশ্রমের দ্বারা ওজন ঝরিয়ে একেবারে ঝরঝরে সুঠাম চেহারা বানান নিজের। ছয়মাস পর নতুন ফোটোশুট করে সেই ছবি আবার পাঠান আদিত্য চোপড়ার কাছে। সেই সময় নতুন ছবি দেখে কিছুটা নিমরাজি হয়েই অর্জুনকে হ্যাঁ বলেছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ইশকজাদে ছবিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরমা নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেন অর্জুন, যে ঘটনাচক্রে একটি মুসলিম ধর্মাবলম্বী মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়। এখান থেকেই গল্প অন্যদিকে মোড় নিতে শুরু করে। পরমা চরিত্রের জন্য অর্জুন কাপুর প্রথম পছন্দ না হলেও হাবিব ফজলের পরিচালনায় অর্জুন আর পরিনীতির কেমিস্ট্রি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলো দর্শকমহলে।
যদিও অর্জুন বোম্বেতেই বড়ো হয়েছেন তবুও ছবির প্রয়োজনে উত্তরপ্রদেশের এক ছোটো শহরের বাসিন্দারা জীবনধারা কেমন হতে পারে তাই নিয়ে নিখুঁত পর্যাচলনা করেছিলেন তিনি। অভিনেতার কথায় জানা যায়, ‘আমি কখনো ইউপিতে যাইনি। জুহুতে বড় হয়েছি। আমি দুনিয়াটা দেখিনি। স্ক্রিপ্ট পড়তে পড়তে আমার ধারণা তৈরি হয়েছিল ছোট শহর সম্পর্কে। আমি ভারতটাকেই ঠিকঠাক চিনতাম না। আমি জুহু-লোখান্ডওয়ালার একজন বলিউড-ঘেঁষা বাচ্চা ছিলাম। ২৩ বছর বয়সে প্রথমবার আদিত্য স্যারের সঙ্গে দেখা করি। সেই সময় আমি ভাবতাম, আমি জানি ভারতের দর্শক কারা। তবে এই ছবিটি আমাকে উপলব্ধি করিয়েছে কারা আমাদের আসল দর্শক।’