প্রবাদ আছে, ‘পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি’। পরিশ্রমের দ্বারা ভাগ্যের চাবিকাঠি এমনভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব, যা বাকিদের কাছে অলৌকিক বলে মনে হয়। যে কোনো ক্ষেত্রে সফলতার প্রথম শর্ত হল প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রম। আজ এমনই এক সেলিব্রেটির সাথে পরিচয় করাবো যিনি এই প্রবাদ বাক্যকেই সত্যি করে দেখিয়েছেন।
নিজের পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তির জোরে আজ তিনি দেশের এক খ্যাতনামা কোরিওগ্রাফার। আমরা কথা বলছি ডান্স গুরু ধর্মেশ ইলেন্ডের। যার সাফল্যের মূল মন্ত্র হল ‘সাফল্য না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের নিজেদের কাজ বন্ধ না করা’ এবং এই মন্ত্রের দ্বারাই আজ ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব তিনি।
বরোদার সরু গলি থেকে মুম্বাইয়ের সেরা কোরিওগ্রাফার হওয়ার যাত্রা ধর্মেশ ইলেন্ডের পক্ষে সহজ ছিল না। জীবনের শুরুটা হয়েছিলো একজন পিয়নের কাজ দিয়ে। আর্থিক অনটন মেটাতে তার বাবা একটি চায়ের দোকান চালাতো এবং তিনি রাস্তায় বড়াপাও বিক্রি করতেন। কিন্তু কপাল খারাপ থাকলে সবদিক দিয়েই দূর্ভাগ্য গ্রাস করে।
পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস সেই চায়ের দোকানটিও ভেঙে দেওয়া হয় পৌরসভা থেকে। ধর্মেশ জানান, তার বাবা চায়ের দোকান থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টাকা রোজগার করতেন এবং এই টাকা দিয়েই তার ঘর চলত। শুধু তাই নয়, তার বাবাও তার পড়ালেখায় পূর্ণ মনোযোগ দিতেন এবং এই উপার্জনেই স্কুলের ফিও দিতেন। এমতাবস্থায় এই সম্বলটি চলে যাওয়ায় একদম পথে বসে পুরো পরিবার।
একটি সাক্ষাৎকারে ধর্মেশ জানান যে, তার ডান্সার হওয়ার শখ ছোটো থেকেই। আর এই স্বপ্নকে ভেঙে যেতে দেয়নি তার বাবা। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থাতেও তাকে নাচের স্কুলে ভর্তি করেন তিনি। সেইসময় তার মনে হয় পড়াশোনা করাটা তার কাছে বিলাসিতা। তাই মাত্র ১৯ বছর বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে একটি অফিসে পিয়নের কাজে যোগ দেন ধর্মেশ। আর তার সাথে চলতে থাকে নাচের প্র্যাকটিস।
কিন্তু ঈশ্বর কার ভাগ্যে কখন কী লিখে রেখেছে কে বলতে পারে। এইভাবেই নিজের স্বপ্নকে তাগড়া করতে করতে ধর্মেশ একদিন পৌঁছে যায় জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো “ডি আই বি”-এর মঞ্চে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বর্তমানে তিনি দেশের অন্যতম বড়ো কোরিওগ্রাফার। বরোদার গলির ছোট্টো ছেলেটা আজ কোটি কোটি টাকার মালিক।