এবার থেকে রেশন দোকানে হয়ে উঠবে মদের ঠেক। রেশন কার্ড দেখালেই মিলবে রঙ বেরঙের মদিরা। তাজ্জব করা কথা হলেও সম্প্রতি এমনই কিছু দাবি জানিয়েছেন বাংলার রেশন ডিলাররা। বছর খানেক আগের ভাইরাল হওয়া একটি গান ‘মদ আমাদের চাই এবার রেশন দোকানে’-র কথাকেই সত্যি করার উদ্যোগ নিয়েছে রেশন ডিলার্স ফেডারেশন। এই বিষয়ে সম্প্রতি রেশন দোকানে মদ বিক্রির অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রেশন ডিলারদের সংগঠন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর এই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রকের প্রধান সচিব সুধাংশু পান্ডেকে। চিঠিটি দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশন। কিন্তু হঠাৎ এই পদক্ষেপ কেন? জানা গেছে রেশন ডিলারদের দাবি, রেশন দোকানগুলি টিকিয়ে রাখতে গেলে এবার যথার্থ পদক্ষেপ নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
পাশাপাশি চিঠির প্রতিলিপি গেছে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব, কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব, কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা ও খাদ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ও সব রাজ্যের খাদ্য কমিশনার ও খাদ্য সচিবদের কাছেও। ডিলারদের দাবি, যত দিন যাচ্ছে ক্রমশ রেশন দোকানের বাজার খারাপ হচ্ছে। তাই দোকানগুলিকে বাঁচাতে সরকারের তরফ থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংগঠনগুলির দাবি, তারা নাকি বহুদিন ধরে কোনোরকম লাভের মুখ দেখেনি। রেশন ডিলার সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আমাদের দেশে ৫ লক্ষ ৩৭হাজার ৮৬৮টি রেশন দোকান আছে। আর এই দোকান গুলির সাথে জুড়ে আছেন প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবন। আর পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ কোটিরও বেশি মানুষ নির্ভরশীল।
ডিলারদের দাবি, বর্তমান পরিকাঠামোতে যে ভাবে রেশন ব্যবস্থা চলছে তাতে রেশন ডিলাররা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। রেশনের পাশাপাশি যাতে ৫ কেজির LPG সিলিন্ডার বরাদ্দ করা যায় সেই ব্যাপারেও খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেছে তারা। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার ফেডারেশনের অন্যতম কর্মকর্তা জয়ন্ত দেবনাথের কথায়, “এক একটি রেশন দোকানে দুই থেকে চারজন করে কর্মচারী রয়েছেন। মালিক ও কর্মচারীদের পরিবারে রয়েছেন আরও ৩-৪ জন সদস্য। হিসেব কষে দেখলে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ রেশন দোকানের ওপর নিজের জীবিকা নির্বাহ করে। তাই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির উচিত রেশন দোকানগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা।”
আর এই কারণেই নাকি বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছন লিকার বিক্রির ব্যবস্থাপনাকে। তিনি আরো বলেন,রেশন দোকানগুলিকে বাঁচিয়ে রেখে যাতে মালিক ও শ্রমিকপক্ষকে বাঁচিয়ে রাখা যায় সেই জন্যই আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এমন প্রস্তাব দিয়েছি।” জয়ন্ত দেবনাথের প্রস্তাব মেনে নিলে রাজ্যের রাজস্ব যে বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই কিন্তু মদের মতো একটা নেশাদ্রব্য এতোটা সহজলভ্য হয়ে গেলে সমাজ কোন পথে যাবে সেটা অবশ্যই ভাবার বিষয়।