Papiya Paul

একদিকে সংসার, অন্যদিকে ভারতীয় রেলের দায়িত্ব, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রথম মহিলা চালক হিসাবে নজির গড়লেন বাংলার মেয়ে

নিউজশর্ট ডেস্কঃ কথায় বলে, নারী মানেই মায়ের জাত। যারা প্রয়োজনে সব পারেন। কখনও তারাই স্নেহময়ী মা পার্বতী আবার কখনও রণচন্ডি মা কালী। সেই কারণেই একটি কথা প্রচলিত আছে ‘যে রাঁধে সে চুলো বাঁধে’। আর এমনই এক নারীর গল্প আজ আপনাদের শোনাবো আমার। যিনি একাধারে স্নেহময়ী মা, গৃহপত্নী আবার অন্যদিকে তিনিই একজন ট্রেনের লোকো পাইলট(Loco Pilot), যিনি উচ্চগতিবেগে ট্রেন ছোটান লাইনের ওপর দিয়ে।

   

এই গল্প খড়্গপুরের বাসিন্দা দীপান্বিতা দাসের(Dipanwita Das)। বিগত বহু বছর ধরেই তিনি ভারতীয় রেলে(Indian Railways) কর্মরত। এর আগে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি চালিয়েছেন পণ্যবাহী ট্রেন বা মালগাড়ি। তবে এবারে যেন তার মুকুটে যোগ হল নতুন নক্ষত্র। এবার থেকে তিনি যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো শুরু করলেন। একাদশী দিন থেকেই তিনি প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন চালালেন। প্রথমে তিনি মেদিনীপুর থেকে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে হাওড়ায় আসেন, এরপর আবার ফিরেও যান।

এই বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেল(South Eastern Railways) কতৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে দীপান্বিতা হলেন প্রথম সেই মহিলা লোকো পাইলট যিনি গড়েছেন এক নজির। তিনি খড়গপুর ডিভিশনের মেদিনীপুর থেকে হাওড়া শহরতলী সেকশনে যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে এলেন। জানা যায়, বুধবার একাদশীর দিন সকাল ৬:২০ মিনিটের মেদিনীপুর-হাওড়া লোকাল ট্রেন চালান দ্বীপান্বিতা।

তবে দীপান্বিতার এই যাত্রা খুব সহজ ছিল না। নানান প্রতিকূলতাকে কাটিয়েই সফলতা পায় দীপান্বিতা। প্রথম ২০০৩ সালে তিনি আর্য ডিভিশনের আন্ডারে রেলের চাকরিতে যোগ দেন এরপর ২০০৬ সালে তার খড়গপুর ডিভিশনে বদলি হয় এরপর ২০১৪ সাল থেকে তিনি পণ্যবাহী ট্রেনের লোকো পাইলট হিসাবে কাজ শুরু করেন। তারপর অবশেষে এই প্রাপ্তি।

প্রথম দিন দীপান্বিতা সঙ্গে ছিলেন তপন কুমার সামন্ত নামক এক সিনিয়র স্টাফ। তবে যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দের সাথেই ট্রেন চালান তিনি। এই প্রসঙ্গে দীপান্বিতা বলেন, ‘বুধবার সকালে লোকাল ট্রেন নিয়ে হাওড়া গিয়েছিলাম আবার সেখান থেকে মেদিনীপুরে ফিরিয়ে এনেছি আরও একটি লোকাল ট্রেন। পণ্যবাহী ট্রেনের সাধারণত সময় একটু বেশি লাগে কিন্তু যাত্রীবাহী ট্রেনের সেটা অনেকটাই কম। ট্রেন চালানোর আগে শারীরিক পরীক্ষার পরে ট্রেন চালানোর অনুমতি মেলে। আমরা এখানে সবাই সমান। এতদিন ধরে ট্রেন চালাচ্ছি ভয়ের কিছুই নেই।’ অপরদিকে যথারীতি মহিলা লোকো পাইলট দেখে সকলের চোখ কপালে উঠেছিল। কিন্তু কোনোকিছুকে পরোয়া না করেই নিজের কাজ করে যান দীপান্বিতা। তার এই যাত্রাকে কুর্নিশ জানায় টিম NEWZ Short।