Papiya Paul

বাংলার কমেডি দুনিয়ার রাজা! শেষ বয়সে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের করুণ পরিণতি জানলে চোখে জল আসবেই

নিউজশর্ট ডেস্কঃ বাংলা সিনেমার(Tollywood) ক্ষেত্রে একজন কিংবদন্তির নাম ভানু বন্দোপাধ্যায়(Bhanu Bandopadhyay
Indian actor)। তিনি হলেন স্বর্ণযুগের জনপ্রিয় অভিনেতা। অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা থেকে কমেডি(Comedy) সবেতেই তুখোড় ছিলেন ভানু বাবু। তার অসাধারণ কমিক টাইমিং থেকে সংলাপ, ডায়লগ প্রদান সবকিছুতেই একেবারে অন্ধভক্ত আট থেকে আশি। তবে এত ভাল একজন অভিনেতা হওয়া সত্বেও তার শেষ জীবন কেটেছে বেশ কষ্টের মধ্যে দিয়ে।

   

যেই মানুষটি তার অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে দর্শকদের হাসিয়েছেন তিনি শেষজীবনে কষ্টে কেঁদে ভাসিয়েছেন। ১৯২০ সালের ২৬শে আগস্ট বাংলাদেশের বিক্রমপুরে জন্মেছিলেন ভানু বাবু। অভিনয়ের পদার্পণের পর তার নাম ভানু হলেও এই অভিনেতার আসল নাম সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়। ঢাকা জেলার সেন্ট ‘গ্রেগরি’স হাই স্কুল ও জগন্নাথ কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। এরপর একটি কোম্পানিতে চাকরির জন্য ১৯৪১ সালে কলকাতায় আসেন তিনি।

ভানু বাবুর সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বোসের। তিনি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুব সম্মান করতেন। চন্দ্রগুপ্ত নাটকের চাণক্যের ভূমিকায় ১৯৪৬ সালে মঞ্চে অভিনয় করেন ভানু বাবু। এই কাজ ছিল তার অভিনয়ের প্রথম কাজ। সেই বছর তিনি বেতার শিল্পী নীলিমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন। ১৯৪৯ সালে ‘মন্ত্রমুগ্ধ’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করার সুযোগ পান এই অভিনেতা।

এরপর ১৯৫১ সালে ‘বরযাত্রী’, ১৯৫২ সালে ‘পাশের বাড়ি’ সিনেমায় তার অসাধারণ অভিনয় মন জয় করেছিল দর্শকদের। আর তার পরের বছরই ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সিনেমায় তিনি নতুন মাইলফলক ছুয়েছিলেন। তার বিখ্যাত ডায়লগ ‘মাসিমা মালপো খামু’ আজও মনে রেখেছেন সিনেমাপ্রেমীরা। এরপর একে একে বহু ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। প্রায় তিনশোরও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন ভানু বাবু।

তারসঙ্গে জহর রায়ের জুটি পছন্দ করত বাঙালি দর্শকেরা। তবে ষাটের দশকের শেষ দিকে আস্তে আস্তে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ভানু বন্দোপাধ্যায়ের। এমনকি গ্রাস করতে থাকে মানসিক অশান্তি। উত্তম কুমার, অনিল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে শিল্পী সমিতি তৈরি করেছিলেন তিনি সেই সময় সেটি ভেঙে যায়। আর এই আঘাত সহ্য করতে পারেননি তিনি। এ সময় হার্ট অ্যাটাক হয় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়।

আস্তে আস্তে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান তিনি। কোন কাজের অফার তার কাছে আসতো না। টাকাও উপার্জন করার জন্য তিনি যাত্রা, থিয়েটারেও অভিনয় করেছিলেন। তবুও সেই টাকাতে সংসার চালানো অসম্ভব ছিল অবশেষে ১৯৮৩ সালের ৪ ঠা মার্চ পরলোক গমন করেন এই অভিনেতা। আর এভাবেই বাংলা ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যায় এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।