শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: আজ আমরা আপনাকে এমন একটি ট্রেন সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যেখানে ভ্রমণের জন্য আপনার টিকিটের প্রয়োজন হয় না এবং এই ট্রেনে কোনও টিটিইও নেই। এক পয়সাও খরচ না করেই আপনি এই ট্রেনে বিনামূল্যে ভ্রমণ করতে পারবেন। এখানে আমরা যে ট্রেনের কথা বলছি, তার নাম হল ভাকরা-নাঙ্গাল ট্রেন।
ভাকরা-নাঙ্গাল ট্রেন ভারতের অনন্য এবং ঐতিহাসিক ট্রেন পরিষেবাগুলির মধ্যে একটি। এই ট্রেনটি গত ৭৫ বছর ধরে পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের মধ্যে যাত্রীদের বিনামূল্যে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রদান করে আসছে। সুন্দর ও প্রাকৃতিক দৃশ্যে পরিপূর্ণ এই ভ্রমণ পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
ভাকরা-নাঙ্গাল ট্রেনের সম্পর্কে জানুন
- ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া এই ট্রেনটি ভাকরা নাঙ্গাল বাঁধ নির্মাণে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল। এই রেলপথটি প্রকল্পস্থলে ভারী যন্ত্রপাতি এবং শ্রমিক পরিবহনের জন্য নির্মিত হয়েছিল।
- ট্রেনটি প্রথমে একটি বাষ্পীয় ইঞ্জিন দ্বারা চালিত ছিল, যা ১৯৫৩ সালে একটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। তবে, এই ট্রেনটি এখনও আমাদের এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং পুরানো সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।
- এই ট্রেনটি প্রতিদিন ১৩ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে এবং পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশকে সংযুক্ত করে।
- যাত্রাটি শতদ্রু নদী পার হয়। এরপর এটি শিবালিক পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যায়। পথে, এটি দুটি ঘোড়ার নালের আকৃতির টানেল এবং ছয়টি স্টেশনের মধ্য দিয়ে যায়। এই রুটে অবস্থিত ১৫৮.৫ মিটার উঁচু রেল-কাম-সড়ক সেতুটি ভ্রমণকারীদের জন্য একটি প্রধান আকর্ষণ।
- এই ট্রেনে টিকিট লাগে না এবং টিকিট চেকিং কর্মীও নেই।
আরও পড়ুন: এক-দুই নয়, এক্কেবারে চার দিক দিয়ে ঢুকে পড়ে ট্রেন! ভারতে ডায়মন্ড ক্রসিং কোথায় রয়েছে?
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন প্রায় ৮০০ জন লোক এই ট্রেনে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের জন্য এটি পরিবহনের একটি সুবিধাজনক মাধ্যম, অন্যদিকে পর্যটকদের জন্য এটি শিবালিকের সৌন্দর্য প্রত্যক্ষ করার এক স্মৃতিকাতর অভিজ্ঞতা প্রদান করে। ভাকরা-নাঙ্গল ট্রেন কেবল একটি পরিবহন পরিষেবা নয়; এটি ভারতের শিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এর অনন্য রুট, টানেল এবং নদী পারাপারের পথ ভ্রমণকারীদের জন্য এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা প্রদান করে। পরের বার যখন আপনি হিমাচল প্রদেশ এবং পাঞ্জাব ভ্রমণ করবেন, এই ট্রেনে বিনামূল্যে ভ্রমণ উপভোগ করতে ভুলবেন না!