শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: আধার, ডিএ এবং সপ্তম বেতন কমিশন, সব নিয়ে রীতিমত উত্তেজনা বিরাজ করছে বাংলায়। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ্য ভাতা (DA) ইস্যুটি রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিবাদ এবং বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সরকারি কর্মচারীরা উচ্চতর ডিএ দাবি করছেন।
অথচ গত মাসে, রাজ্য সরকার রাজ্য বাজেটের অংশ হিসাবে ৪% ডিএ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। আগে, রাজ্য কর্মচারীরা ১৪% ডিএ পাচ্ছিলেন, কিন্তু এখন তা ১৮% এ উন্নীত করা হবে। তবে, এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও, বিক্ষোভ এখনও চলছে, কারণ কর্মীরা ডিএ বৃদ্ধিতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট নন এবং নতুন দাবি করছেন। এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, তবে এটি কখন কার্যকর হবে তার কোনও স্পষ্ট সময়সীমা নেই। এটি কার্যকর হয়ে গেলে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা ১০-৩০% বেতন বৃদ্ধি দেখতে পেতে পারেন।
এই ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ কেন?
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষের একটি প্রধান বিষয় হল রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে ডিএ-র পার্থক্য। সর্বশেষ রাজ্য বেতন কমিশন, ষষ্ঠ বেতন কমিশন, ২০১৫ সালের নভেম্বরে চালু হয়েছিল এবং প্রায় এক দশক ধরে সপ্তম বেতন কমিশনের কোনও আপডেট নেই। ইতিমধ্যে, সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা ৫৩% ডিএ হার পান। এটি রাজ্য কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ হারের তুলনায় ৩৫% বেশি এবং অনেক রাজ্য কর্মচারী তাঁদের ডিএ কেন্দ্রীয় সরকারের হারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার দাবি জানাচ্ছেন। এই বৈষম্য রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হতাশা তৈরি করেছে, যারা মনে করেন যে তাদের কেন্দ্রীয় প্রতিপক্ষের তুলনায় তাদের সাথে অন্যায্য আচরণ করা হচ্ছে।
ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক নিয়ে নতুন দাবি
চলমান এই বিক্ষোভের মধ্যে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখার্জি একটি নতুন এবং বিতর্কিত দাবি উত্থাপন করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন যে আধার এখন রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং এমনকি সিম কার্ডের মতো বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে সংযুক্ত। তবে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে ভোটার কার্ড আধারের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। মুখার্জির মতে, এর কারণ হল রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায় এবং সম্ভবত জাল বা প্রক্সি ভোট দিয়ে সিস্টেমকে কারসাজি করতে চায়। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, আধার যেমন অন্যান্য নথির সাথে সংযুক্ত, তেমনি সরকারের উচিত আরও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য ভোটার কার্ডের সাথে আধার সংযুক্ত করার কথা বিবেচনা করা। মুখার্জির পোস্টটি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, যা প্রচুর বিতর্কিত আলোচনার জন্ম দেয়। তবে, তাঁর এই পরামর্শ সম্পর্কে ক্ষমতাসীন সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।