শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: ভারতীয় রেলপথকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম নেটওয়ার্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৩০০ টিরও বেশি ট্রেন চলাচল করে, হাজার হাজার এবং লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। ট্রেন স্বাভাবিকভাবেই একটি সস্তা এবং আরামদায়ক মাধ্যম, যেখানে মানুষ কম টাকায়ও নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হল ভারতীয় রেলপথ ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকেও প্রতিফলিত করে। মানুষ যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ট্রেনে ভ্রমণ করে, এই সময়ে তারা বিভিন্ন ধরণের মানুষের সাথে দেখা করতে পারে। বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতি, খাবার এবং ভাষা শৈলী শেখার সুযোগও পাওয়া যায়। সবই অত্যন্ত কম খরচে।
তবে, ট্রেনে ভ্রমণের সময়, গাছপালা, কাছাকাছি মাঠ, বাড়ি, পাহাড়, নদী ইত্যাদি ছাড়াও, ট্রেনের ট্র্যাকগুলিও দৃশ্যমান হয়। অনেক সময় আপনি নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন যে ট্রেনগুলো একে অপরকে অতিক্রম করে। যার মধ্য দিয়ে ট্রেন এক ট্র্যাক থেকে অন্য ট্র্যাকে যায়, কিন্তু আপনি কি ডায়মন্ড ক্রসিংয়ের কথা শুনেছেন, যেখানে ট্রেনগুলি চার দিক থেকে আসে কিন্তু কখনও একে অপরের সাথে সংঘর্ষ হয় না। এটি আসলে একটি অনন্য রেল ক্রসিং।
আরও পড়ুন: কেন চারধাম যাত্রা সর্বদা যমুনোত্রী থেকেই শুরু হয়? কারণ জানলে অবাক হবেন
ডায়মন্ড ক্রসিং (Diamond Crossing) কোথায় রয়েছে?
আসলে, এটি ভারতের একমাত্র ডায়মন্ড ক্রসিং, মহারাষ্ট্রের নাগপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থিত। এখানে রেললাইনগুলি হীরের তলদেশের মতো একে অপরকে ছেদ করে। এই জায়গার বিশেষত্ব হলো, দেশের চার কোণ থেকে এখানে ট্রেন আসে, কিন্তু এখানে কখনও কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।
প্রতিদিন শত শত ট্রেন যাতায়াত করে
মুম্বাই-হাওড়া, দিল্লি-চেন্নাই, কাজিপেট-নাগপুর, ইটারসি-নাগপুর রুট থেকে ট্রেনগুলি এখানে আসে। এই ডায়মন্ড ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রেন যাতায়াত করে, কিন্তু এখানে কখনও কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। এর পেছনে যদিও একটি কারিগরি কারণ রয়েছে। আসলে, এখানে সিগন্যাল সিস্টেম এবং ইন্টারলকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যার মধ্য দিয়ে ট্রেনটি কোনও দুর্ঘটনা না ঘটিয়ে ট্র্যাক পরিবর্তন করে আরামে চলে যেতে পারে। এখানে অটোমেটিক সিগন্যাল সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, যা ট্রেনের গতি, দিক এবং সময় নির্দেশ করে। এ অনুযায়ী সংকেত দেওয়া হয়।
এক্সপ্রেস এবং সুপারফাস্ট ছাড়াও, রাজধানী, দুরন্ত এবং গরীব রথও এখান দিয়ে যায়। এখানে নিযুক্ত রেল কর্মীরা সর্বদা সতর্ক থাকেন যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। ট্র্যাক পর্যবেক্ষণ সর্বদা করা হয়।