দিঘায় মন্দিরে উদ্বোধনের দুদিন যেতেই শুরু বিতর্ক! ‘জগন্নাথ ধাম’ তকমা মুছতে হবে দাবি পুরীর

Digha Jagannath Temple new controversy

দিঘায় মন্দিরে উদ্বোধনের দুদিন যেতেই শুরু বিতর্ক! ‘জগন্নাথ ধাম’ তকমা মুছতে হবে দাবি পুরীর

Partha Sarathi Manna

Published on:

পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ দিনে মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের তৈরি নতুন দিঘা জগন্নাথ মন্দিরকে ‘জগন্নাথ ধাম’ নামে উদ্বোধন করা নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। ওড়িশার বহু জগন্নাথ ভক্ত, পুরোহিত, গবেষক তথা সেবায়েতরা এই নামকরণের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু কেন? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে।

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে ‘জগন্নাথ ধাম’ বলা নিয়ে শুরু বিতর্ক!

ভক্ত তথা পুরোহিত ও সেবায়েতদের দাবি, ‘জগন্নাথ ধাম’ শব্দটি শুধুমাত্র পুরীর ১২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের জন্য সংরক্ষিত, যা হিন্দু ধর্মের অন্যতম পবিত্র তীর্থক্ষেত্র। এই প্রসঙ্গে ওড়িশার বিখ্যাত বালুকাশিল্পী ও পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত সুদর্শন পট্টনায়ক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন। তার মতে, “আমাদের ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, কেবলমাত্র পুরীতেই ‘জগন্নাথ ধাম’ আছে। অন্য কোনো মন্দিরে এই নাম ব্যবহার করা ধর্মীয় ঐতিহ্য ও ভক্তদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।” তাই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝিকে চিঠি লিখে এই বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ করেছেন তিনি।

এছাড়া, কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, দিঘা মন্দিরে ‘ব্রহ্ম’ স্থাপন করা হয়েছে। ওড়িশার ভক্তদের মতে, পুরীর মন্দিরে ‘ব্রহ্ম’ স্থাপনের রীতি শতাব্দী প্রাচীন এবং একান্ত গোপন ও পবিত্র। অন্য কোথাও এই রীতি অনুসরণ করা হলে তা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে।

পুরীর সেবায়েত ও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রবীণ সেবায়েত রামকৃষ্ণ দাসমহাপাত্র স্পষ্ট জানান, “জগন্নাথ ধাম মানে কেবল পুরী। এই বিশেষ ধর্মীয় আচার ও রীতি কেবলমাত্র পুরীতেই পালন হয়, অন্য কোথাও নয়।” তাঁর মতে, দিঘা মন্দিরকে ‘ধাম’ বলা মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করবে ও ঐতিহ্যকে অসম্মান করবে।

আরও পড়ুনঃ আরও আরামদায়ক হবে হাওড়া-মালদা যাত্রা, চালুর পথে নমো ভারত? দেখুন সময়সূচি সহ ভাড়া

শ্রী জগন্নাথ সেনার আহ্বায়ক প্রিয়দর্শন পট্টনায়কও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেন বাঙালিদের বিভ্রান্ত না করেন। বাঙালিরা জানেন, কোনটা আসল, কোনটা নয়”। ওড়িশা সরকার ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনকে (SJTA) দিঘা মন্দিরের নামকরণ ও অন্যান্য বিতর্কিত বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের জন্য বলা হয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥