শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ফারাক্কা সেতুর (Farakka Setu) কাজ শেষ করার কথা ছিল, কিন্তু দুর্ঘটনা এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে নির্মাণ বিলম্বিত হয়েছিল। তবে, এবার অপেক্ষার অবসান। গঙ্গার উপর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতুটি শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে। এই সেতুটি মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে। এই নতুন সেতুটি চার লেনের হবে, যা যানজট কমাবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করবে। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করি লোকসভায় রাজ্যের একজন সাংসদের প্রশ্নের জবাবে এই ঘোষণা করেছেন।
বর্তমান ফারাক্কা সেতু সম্পর্কে বিস্তারিত
বর্তমান ফারাক্কা সেতুটি যখন নির্মিত হয়েছিল, তখন রাস্তাটি মাত্র দুই লেনের জাতীয় মহাসড়ক ৩৪ ছিল এবং প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০ যানবাহন চলাচল করত। তবে, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে যানজট একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এখন, মহাসড়কটি প্রতিদিন ১২,০০০ এরও বেশি যানবাহন চলাচল করে এবং বিদ্যমান দুই লেনের সেতুটি ক্রমবর্ধমান বোঝা সামলাতে অক্ষম।
নতুন সেতু সম্পর্কে বিস্তারিত
দ্বিতীয় ফারাক্কা সেতুর কাজ ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল এবং এখনও পর্যন্ত ৮৩.৬% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন সেতুটি ৫,৪৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে, যার মধ্যে অ্যাপ্রোচ রোডও থাকবে।
মূল সেতু অংশটিই ২.৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে, যার ৮৪টি পিলার এটিকে ধরে রাখবে। সেতুটি নির্মাণের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২১ কোটি টাকা, কিন্তু নির্মাণের সময় বিলম্ব এবং দুর্ঘটনার কারণে চূড়ান্ত ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২২ কোটি টাকা।
সম্পূর্ণ হওয়ার পর, নতুন ফারাক্কা সেতুটি হবে জলের উপর নির্মিত রাজ্যের দীর্ঘতম সেতু, যার প্রস্থ ২৫ মিটার (৮২ ফুট) হবে। এই কাজের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্মাণকারী কোম্পানি বিশাখাপত্তনমে অবস্থিত। তারা প্রকল্পটির জন্য একটি চীনা কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব করেছে।
নতুন সেতুর সুবিধা
এটি পুরাতন দুই লেনের সেতুর উপর চাপ কমাবে, যা সড়ক যান চলাচল এবং ফারাক্কা ব্যারেজ উভয়ের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে কাজ করবে। নতুন চার লেনের সেতুটি যাতায়াতকে আরও সহজ এবং দ্রুততর করবে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ এবং রাজ্যের অন্যান্য অংশের মধ্যে যাতায়াতকারী মানুষের জন্য।
প্রসঙ্গত, বর্তমান দুই লেনের সেতুটি কেবল ভারী যানবাহনের সাথেই লড়াই করছে না বরং ক্রমবর্ধমান যানবাহনের চাপের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। নতুন সেতুটি সম্পন্ন হলে, এটি অঞ্চলের বাসিন্দা এবং যাত্রীদের জন্য বড় স্বস্তি বয়ে আনবে।