আর ফ্রি নয়, এবার থেকে এত টাকা দিয়ে নিতে হবে রেশন! বড় সিদ্ধান্তের পথে সরকার

Free Ration Canceled

আর ফ্রি নয়, এবার থেকে এত টাকা দিয়ে নিতে হবে রেশন! বড় সিদ্ধান্তের পথে সরকার

Shree Bhattacharjee

Published on:

শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: বিনামূল্যে রেশন দেওয়া কি শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যাবে? নতুন চিন্তার পাহাড় মধ্যবিত্ত থেকে গরিব মানুষের মাথায়। ভারত সরকার দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের খাদ্যের ক্রমবর্ধমান দাম মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য বিনামূল্যে রেশন প্রদান করে আসছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারীর সময় থেকে। এই বিনামূল্যে রেশন প্রকল্পটি ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে উপকৃত করেছে। তবে, এখন এই বিনামূল্যে রেশন পরিষেবা বন্ধ হওয়ার খবর সামনে আসছে। নীতি আয়োগের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই পরিষেবাটি অব্যাহত থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নীতি আয়োগের প্রতিবেদনে কী এমন বলা হল?

নীতি আয়োগ সম্প্রতি ‘২০০৫-২০০৬ সাল থেকে ভারতে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে ২৪.৮২ কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এই প্রতিবেদনটি পড়ে অনেকেই ভাবছেন যে এটি কি বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প বন্ধ করার কারণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে! এখন প্রশ্ন হল তাহলে এই ২৪ কোটি মানুষের নাম কি বর্তমানে বিনামূল্যে রেশন গ্রহণকারী সুবিধাভোগীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে!

কতটা চিন্তার ব্যাপার!

নীতি আয়োগে সম্প্রতি একটি সভায় নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে রেশন ডিলাররা বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ করার পরিবর্তে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি কেজিতে অল্প পরিমাণে ১ থেকে ১.৫ টাকা চার্জ করা শুরু করতে পারেন। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য হল রেশন ডিলারদের আয় বৃদ্ধি করা। বর্তমানে রেশন ডিলাররা প্রতি কেজিতে কমিশন হিসেবে মাত্র ৯০ পয়সা (১ টাকার কম) আয় করেন। এই নতুন প্রস্তাবের মাধ্যমে, ডিলাররা প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫-৭ টাকা আয় করতে পারবেন। এতে গ্রাহকদের অসুবিধাও সেইভাবে হবে না। ডিলারদের উপকার হবে।

হঠাৎ কেন এই পদক্ষেপ?

সরকার এই প্রস্তাবটি বিবেচনা করছে কারণ বিনামূল্যে রেশন প্রকল্পের জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। প্রতি বছর মানুষকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করতে ১১.৮০ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, যা সরকারের অর্থায়নের উপর অনেক চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়াও, রেশন ডিলাররা উচ্চ কমিশন দাবি করছেন, যার ফলে এই নতুন প্রস্তাবটি নিয়ে আসা হয়েছে। বলা বাহুল্য, যদি এটি করা হয়, তাহলে মানুষকে বিনামূল্যে রেশন পাওয়ার পরিবর্তে তাদের রেশনের জন্য অর্থ প্রদান করতে হতে পারে।

প্রসঙ্গত, সরকার যদিও ঘোষণা করেছিল যে বিনামূল্যে রেশন প্রকল্পটি আগামী পাঁচ বছর ধরে চলবে, নতুন প্রস্তাবটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এককথায় বলতে গেলে বিনামূল্যে রেশন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সরকার পাঁচ বছর ধরে এই প্রকল্পটি চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, রেশনের জন্য লোকেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার নতুন প্রস্তাব সবকিছু বদলে দিতে পারে। সরকার এই পরিকল্পনাটি নিয়ে এগিয়ে যাবে কিনা, নাকি জনগণকে সহায়তা করার জন্য অন্য কোনও উপায় খুঁজে পাবে তা এখনও দেখার বিষয়।

সঙ্গে থাকুন ➥