পার্থ মান্নাঃ ভারতবর্ষের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম গৌতম আদানি (Gautam Adani)। শুধুমাত্র দেশেই নয় বিদেশ থেকেও কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে তার সংস্থাগুলি। তবে এবার মাসাই দেশ পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়াতে একেরপর এক বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁর সংস্থাকে। প্রথমে বিমান বন্দরের লিজ পাওয়ার কথা ছিল তাতে আদালত স্থগিতাদেশ জারি করে। আর এখন জানা যাচ্ছে দেশের বিদ্যুতের পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য করা ৭৩ কোটি ৬০ লক্ষ ডলারের চুক্তিতে স্থগিতাদেশ পড়ে গিয়েছে।
পূর্ব আফ্রিকাতে বড় ধাক্কা খেল আদানির সংস্থা
জানা যাচ্ছে দেশের বিদ্যুৎ পরিষেবাতে যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে তাই আগামী ৩০ বছরের জন্য সরকারের সাথে ‘ট্রান্সমিশন লাইন’ তৈরির জন্য চুক্তি হয়। কিন্তু আদানির কোম্পানি ‘কেনিয়া ইলেকট্রিক্যাল ট্রান্সমিশন কোম্পানি’র (KETRACO) এর এই চুক্তির উপর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেছে দেশের আদালত। যার ফলে এই প্রকল্পটি বিশ বাওঁ জলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে আদানি গ্রূপের শেয়ারেও বেশ প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
বড় রায় ঘোষণা কেনিয়ার হাই কোর্টের
আসলে এই চুক্তি হওয়ার পর কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হবে এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয় কেনিয়ার ল সোসাইটি। কেনিয়ার ২০২১ এর সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের আইনে বলা হয়েছে, বেসরকারি কোম্পানির সাহায্যকোনো কাজ হলে সেখানে দেশের মানুষের যোগদান বাধ্যতামূলক। কিন্তু কোট্রাকো ও আদানি এনার্জি এর মধ্যে চুক্তির ক্ষেত্রে সেই নিয়মের উলঙ্ঘন করা হয়েছে। গতকাল অর্থাৎ ২৬শে অক্টোবর দেশের হাই কোর্ট এই মামলার রায় জানিয়েছে হাই কোর্ট। কোর্ট জানিয়েছে, মামলার ফয়সালা হওয়ার আগে পর্যন্ত কোনো কাজ করতে পারবে না কেনিয়া সরকার ও আদানির সংস্থা।
বিমানবন্দরের চুক্তিতেও জারি স্থগিতাদেশ
অবশ্য শুধু এই প্রকল্পেই নয়, এর আগে কেনিয়াট্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লিজ নিয়েও উদ্যোগী হয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। যেটা সফল হলে কেনিয়ার ওই এয়ারপোর্টের আগামী ৩০ বছরের মালিকানা পেনেন আদানি। কিন্তু সেখানেও কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কার জেরে ক্ষোভ জমতে শুরু হয়। পরবর্তীতে ধর্মঘটের দ্বারা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। অভিযোগ ওঠে এভাবেই নাকি বিমানবন্দরকে সম্পূর্ণ বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে দেশের সরকার। তাই আদালত হস্তক্ষেপ করলে সেই চুক্তিতেও স্থগিতাদেশ জারি হয়।
প্রসঙ্গত, এই দুই চুক্তির বাস্তবায়নে বাঁধা আসার পিছনে চীনের উস্কানি রয়েছে বলে দাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে কেনিয়া ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। যেটা শোধ করতে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার থেকেও কয়েকবার ঋণ নিয়েছে কেনিয়া। এভাবেই ঋণের দায়ে ডুবিয়ে কখন এয়ারপোর্টের ৯০% মালিকানা হড়পে নিতে পারে চীন। যদিও ঋণ মেটাতে জাতীয় সম্পত্তি লিজ বা হস্তান্তর করা হবে না বলেই জানাচ্ছে কেনিয়ার সরকার। এখন আগামী দিন কি হতে চলেছে সেটাই দেখার বিষয়।