কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ ২০১৪ সালে ভারত বিশ্বের মধ্যে দশম বৃহত্তম অর্থনীতি ছিল, যার জিডিপি (GDP Rank) ছিল ২.০৭ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে, ১১ বছর পর অনেকটা পাল্টেছে দেশের অর্থনৈতিক ছবি। নীতি আয়োগের সিইও বিভি সুব্রহ্মণ্যমের মতে, ২০২৫ সালে, দেশের জিডিপি পৌঁছেছে ৪.১৮ ট্রিলিয়ন ডলারে, যার ফলে ভারত চলতি বছরে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে।
দেশের জিডিপি-তে কলকাতার অবদান কতটা?
তবে, ভারতের এই অর্থনৈতিক উন্নতি বা জিডিপি-তে কলকাতার অবদান মাত্র ১.০৫ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী এমনটাই জানা গিয়েছে। ওই সমীক্ষা রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-তে ভারতের অন্যান্য শহরগুলির নিরিখে কলকাতা পিছিয়ে রয়েছে অনেকটাই। আর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ফের সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাজ্যের রাজধানী কলকাতা।
দেশের জিডিপি-তে কোন দেশের অবদান সবচেয়ে বেশি?
ওই সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে মুম্বই, যার অবদান ৬.১৬ শতাংশ। এরপরেই রয়েছে রাজধানী দিল্লি, যার অবদান ৪.৯৪ শতাংশ। ১.৮৭% অবদান সহ তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেঙ্গালুরু, এরপর চতুর্থ স্থানে রয়েছে হায়দরাবাদ, যার অবদান ১.২৪%, পঞ্চম স্থানে ১.১২% অবদান সহ রয়েছে চেন্নাই ।
কত নম্বরে রয়েছে কলকাতা?
দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে অবদানের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে কলকাতা, যার অবদান মাত্র ১.০৫%। এরপর সপ্তম স্থানে রয়েছে পুনে, যার অবদান ০.৮১%। অষ্টম স্থানে রয়েছে আহমেদাবাদ, যার অবদান ০.৭৯%। কলকাতার এই তথ্য প্রকাশ হতেই পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি কলকাতার শিল্প, পরিকাঠামো এবং কর্মসংস্থানের বাস্তব অবস্থা।
কলকাতার পিছিয়ে থাকার কারণ কী?
দেশের অর্থনীতিতে অবদানের ক্ষেত্রে কলকাতার এই পিছিয়ে থাকাকে মোটেই অস্বাভাবিক কিংবা আকস্মিক বলে মনে করছেন না দেশের অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, নানা সমস্যা ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বহু বছর ধরেই কলকাতা, বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগ, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হারাচ্ছে।
জিডিপি-তে অবদানকারী শহরগুলির তুলনায় কলকাতার পিছিয়ে থাকার কারণ হিসাবে কর্মসংস্থানকেও দায়ী করেছেন অনেকে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিল্প ও কাজের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। ফলে বহু পড়ুয়া ও দক্ষ কর্মীরা কলকাতা ছেড়ে ভিন রাজ্যে, কখনো বা ভিন দেশে পাড়ি দিচ্ছেন।