কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে চলাকালীন সংঘাতের আবহে উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতি। এর মধ্যেই পরমাণু এবং পাল্টা পরমাণু আক্রমণের হুমকি শোনা যাচ্ছে দুই দেশের পক্ষ থেকে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যখন ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উদ্বিগ্ন তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে, ঠিক তখনই দেশবাসীকে একটি দুর্দান্ত সুখবর শোনালেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি।
কী জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী?
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী আন্দামান সাগরের তলদেশে বিরাট তেলের ভান্ডার থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকার দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধানে বিরাট সাফল্য আসতে চলেছে। এই সম্ভাবনা গায়ানার মত আমূল বদলে দিতে পারে ভারতকে।
আর কী জানা গিয়েছে?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যদি ভারতের এই অনুসন্ধান সফল হয়, তবে দেশের অর্থনীতি ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে ২০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ONGC এবং অয়েল ইন্ডিয়া, আন্দামান ও নিকোবর অঞ্চলে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে গভীর সমুদ্রে ড্রিলিং করে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান প্রসঙ্গে একাধিক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, যদি এই খবর সত্যি হয়, তবে তা ভারতের কাছে জ্যাকপট হিসাবে প্রমাণিত হবে। আর এর ফলে দেশের খরচ যেমন কমবে, তেমনি আমাদের দেশ, তেল আমদানিকারক দেশ থেকে পরিণত হবে তেল রপ্তানিকারক দেশে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও তেলের দাম কমবে অনেকটাই।
কেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গায়ানার সাথে তুলনা করেছেন?
যারা জানেন না তাদের জানিয়ে দিই, ২০১৫ সালে গায়ানাতে মার্কিন সংস্থা Hess Corporation এবং চিনা সংস্থা CNOOC, বিশাল তেলের খনি আবিষ্কার করে সাড়া ফেলে দিয়েছিল সাড়া বিশ্বে। বিশ্বের ১৭তম বৃহত্তম তেল উৎপাদন সংস্থা হিসাবে তাদের রিজার্ভে বর্তমানে প্রায় ১১.৬ বিলিয়ন ব্যারেলের বেশি তেল রয়েছে।
বিশ্বের তেল আমদানিকারক দেশগুলির মধ্যে বর্তমানে ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে। দেশের মোট চাহিদার ৮৫%-এর বেশি তেল বিদেশ থেকে আমদানি করে ভারত। বাকি চাহিদার তেল উত্তোলন করা হয় দেশের অসম, গুজরাট, রাজস্থান, মুম্বাই এবং কৃষ্ণ ও গোদাবরী অববাহিকায়। এছাড়াও, দেশে তেলের সংরক্ষণাগার রয়েছে বিশাখাপত্তনম, ম্যাঙ্গালোর ও পুদুচেরিতে।