কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ ঘুরতে যাওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে অনেকেই ট্রেকিং কিংবা পর্বত আরোহণকে নিজেদের নেশা করে নিয়েছে। যে কারণে অনেকেই ছোটখাটো ট্রেকিং কিংবা পর্বত আরোহণ থেকে শুরু করে বড়-সড় একাধিক পর্বতে আরোহণ সেরে ফেলছেন। তবে এবার পর্বত আরোহণকারীদের জন্য দুঃখের খবর দিল সিকিম সরকার (Government Of Sikkim), নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘায় (Kanchenjunga) আরোহণের ক্ষেত্রে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা আরোহণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন সিকিমের (Sikkim) মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং। জানা গিয়েছে, সেই চিঠিতে তিনি কাঞ্চনজঙ্ঘা আরোহণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে অনুরোধ করে লিখেছেন নেপালের সঙ্গে আলোচনা করে নেপালের দিক দিয়ে মাউন্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা আরোহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিষয়ে। কারণ, তিনি জানিয়েছেন, সিকিমবাসীর কাছে এই শৃঙ্গটি অত্যন্ত পবিত্র।
চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কী অনুরোধ করেছেন প্রেম সিং তামাং?
কেন্দ্রকে পাঠানো ওই চিঠিতে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বিষয় সম্পর্কে লিখেছেন, এবং কেন্দ্রীয় সরকারে কাছে পর্বতের প্রতি পাহাড়বাসীর ভক্তির কথা উল্লেখ করেছেন। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘গত ১৮ মে নেপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস (NIMAS) থেকে পাঁচ জন সদস্যের একটি দল কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গে আরোহণ করেন। এই ঘটনার ফলে সিকিমের আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
মুখ্যমন্ত্রী ওই চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘সিকিমের মানুষের কাছে মাউন্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা অত্যন্ত পবিত্র এবং ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে। এই পর্বতকে সিকিমের সবচেয়ে পবিত্র শৃঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এর নামের অর্থ হলো ‘বরফের পাঁচটি ধন’—যা পাঁচটি ঐশ্বরিক সম্পদের প্রতীক।’ সিকিমের বিশ্বাস, ওই পর্বতে এই পাঁচটি ধন লুকিয়ে রাখা আছে এবং যখন পৃথিবী চরম বিপদের মুখোমুখি হবে তখনই কেবলমাত্র সত্যিকারের ভক্তদের সামনেই তা প্রকাশিত হবে।‘
এখানেই শেষ নয়, ওই চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, ‘এই পর্বতটিকে সিকিমের মানুষ প্রধান রক্ষক ও দেবতাস্বরূপ ‘জোয়ে-ঙ্গা’র বাসস্থান হিসেবে পুজো করেন। এই পবিত্র সত্তাকে ‘ফো-ল্হা’ নামে ডাকা হয়, যিনি সিকিমের সমস্ত অতিপ্রাকৃত শক্তির প্রধান হিসেবে পূজিত হন। এই দেবতাদের ‘ভূমির রক্ষক দেবতা’ হিসেবে স্বীকৃতি ও অভিষেক দেন গুরু ঊরগ্যেন রিনপোচে, যিনি গুরু পদ্মসম্ভব নামেও পরিচিত এবং সিকিমের আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক বা ধর্মগুরু হিসেবে পূজিত হন।’