শ্রীজিতা ঘোষ, কলকাতা: ভারতীয় রেলপথ দেশটির সবচেয়ে সহজলভ্য এবং আরামদায়ক গণপরিবহন ব্যবস্থা। প্রতিদিন রেলওয়ে ১৩,০০০-এরও বেশি ট্রেন পরিচালনা করে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত রাখে। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express), শতাব্দী (Shatabdi Express), তেজস (Tejas Express) ও রাজধানী এক্সপ্রেসের (Rajdhani Express) মতো নতুন ট্রেনগুলো যাত্রাকে করেছে আরও গতিময় ও আরামপ্রদ।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেলপথ নেটওয়ার্ক

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেলপথ নেটওয়ার্ক হিসেবে, ভারতীয় রেল শুধু যাত্রী পরিবহনেই নয়, পণ্য পরিবহনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই বিশাল ব্যবস্থার একটি চমকপ্রদ দৃষ্টান্ত হল দেশের দীর্ঘতম ট্রেন — ‘সুপার বাসুকি’ (Super Vasuki Longest Train of India)।

পণ্যবাহী ট্রেনটির দৈর্ঘ্য

এই বিশাল পণ্যবাহী ট্রেনটির দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন কিলোমিটারেরও বেশি, এবং এতে রয়েছে ২৯৫টি কোচ। ট্রেনটিকে চালাতে ব্যবহৃত হয় মোট ছয়টি লোকোমোটিভ। সুপার বাসুকিকে (Super Vasuki) ভারতীয় রেলের ইতিহাসে পরিচালিত সবচেয়ে দীর্ঘ পণ্যবাহী ট্রেন হিসেবে ধরা হয়।

প্রায় ২৭,০০০ টন কয়লা বহন করে!

রেলক্রসিং পার হতে এই ট্রেনটি অনেক সময় নেয়, যা তার আকার ও ওজনের বিশালতাকেই প্রমাণ করে। সাধারণত ছত্তিশগড়ের কোরবা থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্রের রাজনন্দগাঁও পর্যন্ত প্রায় ২৭,০০০ টন কয়লা বহন করে এটি, যা দেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। পুরো যাত্রায় সময় লাগে প্রায় ১১ ঘণ্টা ১২ মিনিট।

ট্রেনের নামকরণ

এই ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে ভগবান শিবের গলায় জড়ানো পৌরাণিক সাপ ‘বাসুকি’-এর নামে, যা তার শক্তি ও বিশালতার প্রতীক। এই নামকরণ একদিকে যেমন ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করে।

ছত্তিশগড়ের কোরবা থেকে মহারাষ্ট্রের রাজনন্দগাঁও পর্যন্ত কয়লা পরিবহন করে!

সুপার বাসুকি ট্রেনটি মূলত ছত্তিশগড়ের কোরবা (Chhattisgarh Korba) থেকে মহারাষ্ট্রের রাজনন্দগাঁও (Maharashtra Rajnandgaon) পর্যন্ত কয়লা পরিবহন করে থাকে। এটি একবার যাত্রায় প্রায় ২৭,০০০ টন কয়লা বহন করে এবং পুরো যাত্রাপথে প্রায় ১১.২০ ঘণ্টা সময় লাগে।

বাসুকি নাগের সঙ্গে এই ট্রেনের কী সম্পর্ক?

এই ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে হিন্দু ধর্মে উল্লিখিত বাসুকি নাগ (Vasuki Nag) – অর্থাৎ ভগবান শিবের (Shiva) গলায় পরিহিত সাপের নামে। কয়লা পরিবহণে এই ট্রেনটি দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।