নিউজশর্ট ডেস্কঃ টলিউড ইন্ডাস্ট্রির দুই জনপ্রিয় তারকা লাবণী সরকার (Laboni Sarkar) ও কৌশিক ব্যানার্জী (Kaushik Banerjee)। দীর্ঘদিন ধরেই বড়পর্দা থেকে শুরু করে ছোটপর্দায় দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মন জিতেছেন তাঁরা। তবে ভালো মানের অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও এখন সেভাবে ভাইরাল হতে দেখা যায়না তাদেরকে। কেন ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত তারকা হয়েও কোণঠাসা হয়ে গেলেন? কেন পর্দায় আগের মত দেখা মেলে না? এমনই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলল এক সাক্ষাৎকারে।
সম্প্রতি সিটি সিনেমা নামক এক ইউটিউব চ্যানেলের তরফ থেকে সাক্ষৎকার নেওয়া হয়েছে লাবণী-কৌশিক জুটির। সেখানেই টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছেন। শুরুতেই তাদের জিজ্ঞাসা করা হয় সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝে কিভাবে পরিবারকে সময় দেন? উত্তরে কৌশিক ব্যানার্জী জানান, তিনি খুবই সময় ধরে কাজ করেন। রোজ ঘুম থেকে ওঠা ও শুতে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট। আগে থেকেই সমস্তটা প্ল্যান করা থাকে তাই পরিবারকে সময় দিতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি কোনোদিনই।
এরপর ধীরে ধীরে ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে লাবনী সরকার জানান, যেদিন থেকে রাজনীতি প্রবেশ করতে শুরু করেছে সেদিন থেকেই সর্বনাশের সূত্রপাত হয়েছে। বর্তমানে একপ্রকার টাইপকাস্ট হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। অবশ্য তাঁরা এক নন, বহু প্রতিভাযুক্ত অভিনেতা অভিনেত্রীরাই টাইপ কাস্টের শিকার। এছাড়া ইদানিংয়ের টলিউডের সেলিব্রিটি কালচার নিয়েও মুখ খুলেছেন কৌশিক-লাবণী।
অভিনেতা কৌশিকের মতে, আজকাল তো যে রান্নার শো হোস্ট করছে সেও সেলিব্রিটি। যে একটা সিরিয়াল করেছে তাকে হয়তো বাবা মা ছাড়া আর কেউই চেনে না সেও সেলিব্রিটি বলছে নিজেকে। সেলেব্রিটি তো আর সবাই হয় না। সেলেব্রিটির পরিস্কার বাংলা হল সেল হন বা বিক্রি হন, একই একটা গোটা ছবি টেনে নিয়ে জেনে পারবেন তাঁরা। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে ঋতুপর্ণাদের সেটা বলা যায়। তবে এই মুহূর্তে তেমন কেউ নেই।
আরও পড়ুনঃ ‘পুরুষদেরও একটু লজ্জা হওয়া উচিত’! আরজি কর প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
এদিন টলিপাড়ার সিনেমার সাকসেস পার্টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিনেতা জানান, এখন তো দেখি সিনেমা রিলিজের দিনেই কেক কেটে সেলিব্রেশন করা হয়। অথচ সেটা আদৌ কত সপ্তাহ চলবে সেটারই ঠিক নেই। সাইসেস পার্টি হচ্ছে অথচ টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১২ – ১৫টা। কলকাতার এই ধরণের সেলিব্রিটিদের গ্রামে শুটিংয়ে গেলে কেউ চিনতেও পারে না। আর গ্রামের মানুষ মুখ ফিরিয়েছে বলেই আজ ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
প্রশ্ন করা হয়েছিল টলি তারকাদের রাজনীতির সাথে যোগ থাকা নিয়েও। যার উত্তরে তারা জানান, অধিকাংশ তারকারা যারা রাজনীতিতে যাচ্ছেন তারা সকালের পেপারটুকুও পড়ে না। তাহলে মানুষের সম্পর্কে কাজের সম্পর্ককে জানে কি করে? তাঁরা শুধুমাত্র বড় নেতা বা মন্ত্রীদের হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছেন। তাছাড়া রাজনীতিতে প্রবেশের পর ইন্ডাস্ট্রির লোকেদের মধ্যে মমত্ববোধ, ভ্রাত্বিত্ব থেকে মানবিক আদান প্রদান কমে গিয়েছে।