মাত্র ১৫ দিনেই উপচে পড়ছে প্রণামী বাক্স, কত টাকা পেল দিঘার জগন্নাথ মন্দির?

9 Lakh in just 15 days Digha Jagannath Temple Donation

মাত্র ১৫ দিনেই উপচে পড়ছে প্রণামী বাক্স, কত টাকা পেল দিঘার জগন্নাথ মন্দির?

Partha Sarathi Manna

Published on:

পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীর ঢল নামে। মন্দিরের মূল বিগ্রহের সামনে মাত্র একটি প্রণামীবাক্স থাকায় অনেকেই প্রণামী দিতে পারছেন না। ১৫ দিনের মধ্যে প্রণামীর পরিমাণ ৯ লক্ষ টাকা ছাড়িয়েছে, যা দিঘার ইতিহাসে এক নতুন রেকর্ড। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ গুণতে মন্দির কর্তৃপক্ষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিতে হচ্ছে। ভক্তদের এই ভালোবাসা ও আস্থা মন্দিরের জন্য এক অনন্য প্রেরণা হয়ে উঠেছে।

প্রথম ১৫ দিনেই প্রণামী ছাড়ালো ৯ লক্ষ

প্রথম চার দিনেই দর্শনার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। মন্দিরের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিনরাত কাজ করছেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতি মঙ্গলবার প্রণামীর বাক্সের অর্থ গণনা করা হয়। গত মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৭ ঘণ্টা ধরে গোনা হয় প্রণামী। ওইদিন গোনা হয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা শুধু কয়েনে। এছাড়া রয়েছে বিপুল পরিমাণ ১০ ও ২০ টাকার নোট। প্রণামীর টাকা গোনা হচ্ছে সিসিটিভি নজরদারিতে, প্রশাসনিক আধিকারিক, ব্যাঙ্ক কর্মী, ইস্কনের সন্ন্যাসী ও স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতিতে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরাপদ পরিবেশে পরিচালিত হচ্ছে।

বসানো হবে আরও ১০টি প্রণামী বাক্স

ভিড় সামলাতে ও প্রণামীর দানের সুবিধা বাড়াতে মন্দির কর্তৃপক্ষ আরও ১০টি স্টেনলেস স্টিলের প্রণামীবাক্স তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি বাক্সে থাকবে দু’টি তালা এবং সেগুলো মন্দিরের বিভিন্ন স্থানে রাখা হবে, যাতে ভক্তরা সহজে প্রণামী দিতে পারেন। বাক্সগুলোর চাবি নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে থাকবে ও তারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডিউটি করবেন। এর ফলে ভক্তদের প্রণামী দিতে যেমন অসুবিধা হবে না তেমনি ভিড় নিয়ন্ত্রণেও সুবিধা হবে।

এছাড়া, মন্দিরে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা পুলিশ ইতিমধ্যে ১০০ জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই স্বেচ্ছাসেবকরা মন্দির চত্বরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও দর্শনার্থীদের সেবা নিশ্চিত করবেন। এই উদ্যোগে শুধু স্থানীয় বাসিন্দারাই আবেদন করতে পারবেন। যা এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়াবে ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে।

প্রসঙ্গত, দিঘার জগন্নাথ মন্দির এখন শুধু ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, এটি মানুষের ভক্তি ও ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এসে প্রণামী দিয়ে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা প্রকাশ করছেন। মন্দির কর্তৃপক্ষও প্রতিনিয়ত নতুন উদ্যোগ নিয়ে আসছে, যাতে প্রতিটি ভক্তের প্রণামীর দানের সুযোগ নিশ্চিত করা যায়। একইসাথে মন্দিরের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখা যায়। এই মন্দির বাংলার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করেছে, যা আগামী দিনে আরও সমৃদ্ধ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥