প্রকৃতির সৃষ্টি রহস্য আজও বিজ্ঞানের কাছে অধরা। অবাক, অনন্ত, অভাবনীয় এবং জটিল রহস্যে ভরা প্রকৃতির সৃষ্টিতত্ব। বহুবার মানুষ এই রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করলেও ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। কালের প্রবাহে বিজ্ঞানের অগ্রগতি ঘটলেও এখনও বেশ কিছু স্থান রয়েছে যা রহস্যে ঘেরা। এমনই এক রহস্যময় জায়গা হলো মেক্সিকোর জোন অফ সাইলেন্স।
জোন অফ সাইলেন্স বা নিরব ভূমি মেক্সিকোর একটি মরুভূমি। সেন্ট্রাল মেক্সিকোর মাসিপি মরুভূমির দশ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে এই জোন অফ সাইলেন্স। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে যে, জায়গাটির এমন অদ্ভুত নাম কেমন। আসলে গোটা জায়গাটাই এমন অদ্ভুত রহস্যে ঘেরা যে, তার জন্য এই নামটিই বোধহয় সবচেয়ে পারফেক্ট।
মেক্সিকোর এই স্থানটির রহস্যের কারণ আজও মানুষের অজানা। জেনে অবাক হবেন যে, রেডিয়ো সিগন্যাল এখানে কাজ করে না। কম্পাসের কাঁটা অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ঘুরতে শুরু করে। এছাড়াও রাতের বেলা উল্কাবৃষ্টি, হঠাৎ করে গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়া এমনসব অদ্ভুতুড়ে ঘটনা ঘটতে থাকে এখানে। এমনকি রহস্যজনক বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের সঙ্গে তুলনা করাও হয় এই অঞ্চলের অদ্ভুত ঘটনাগুলিকে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এই যে, মেক্সিকোর এই অদ্ভুত জায়গাটি ও কুখ্যাত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল একই অক্ষাংশে অবস্থিত। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতোই এই এলাকার উপর দিয়ে যখন প্লেন উড়ে যায় পাইলটরা দিশা হারিয়ে ফেলে। ঘড়ি, কম্পাস সবকিছুই কাজ করা বন্ধ করে দেয় এখানে।
এছাড়াও এখানকার আরো একটা অদ্ভুত বিষয় হলো এখানে নাকি একধরনের ক্যাকটাস পাওয়া যায় যার রং লাল। অথচ সেই ক্যাকটাসকেই যখন ঐ এলাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তা অদ্ভুত ভাবে সবুজ হয়ে যায়। একাধিক মতবাদ রয়েছে এই অঞ্চলকে নিয়ে। নানা সময়ে এই অঞ্চল পরিদর্শনে আসা মানুষরা অদ্ভুত সব ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন। আর সেই কারণেই জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জোন অফ সাইলেন্স’।
প্রসঙ্গত, এই জায়গাটি সম্পূর্ণরূপে জনবসতিহীন। জানা যায়, এক সময়ে এই অঞ্চলে প্রচুর উল্কাপাত হয়েছে। ১৯৩৮ এবং ১৯৫৪ সালে একই জায়গায় পর পর দু’টি বড় আকারের উল্কা পড়ার ফলে বিশালাকার গর্তও হয়। এর কয়েক বছর পর সাল ১৯৬৯ এ আবারও উল্কাবৃষ্টি হয় এই জায়গায়। আজও বিজ্ঞানীরা এই স্থানের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।