শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: কামারপুকুর এবং বিষ্ণুপুরের (Kamarpukur Bishnupur Line) মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রেল যোগাযোগ অবশেষে শুরু হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার পর, কামারপুকুর রেলওয়ে স্টেশন পুনরুদ্ধারের কাজ গতি পেয়েছে। কামারপুকুর স্টেশনে একটি নতুন যাত্রী অপেক্ষা কক্ষ, টিকিট কাউন্টার এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।এই প্রকল্পটি কামারপুকুরকে বিষ্ণুপুরের সাথে সংযুক্ত করবে। এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে চলেছে।
বলা বাহুল্য, অতীতে প্রকল্পটি বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়েছিল। ২০১২ সালে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ পর্যন্ত রেলপথ চালু করেন, এবং বিষ্ণুপুর পর্যন্ত এটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও করেন। তবে, গোঘাট এবং কামারপুকুরের মধ্যে সমস্যাযুক্ত এলাকা ভবদিঘির উপর দিয়ে রেলপথ নির্মাণে অসুবিধার কারণে নির্মাণ বিলম্বিত হয়। এখন, রেলপথ মন্ত্রণালয় কামারপুকুরকে বিষ্ণুপুরের সাথে সংযুক্ত করার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে।
এই রেলপথ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কামারপুকুর কেবল একটি নিয়মিত স্থান নয়, এটি শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্মস্থান, যা সারা বছর ধরে অসংখ্য দর্শনার্থীকে আকর্ষণ করে। তবে, এখনও পর্যন্ত, রেল সংযোগের অভাবে কামারপুকুরে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিষ্ণুপুরের সাথে সরাসরি রেল যোগাযোগ পর্যটকদের কামারপুকুর ভ্রমণকে অনেক সহজ করে তুলবে, পর্যটন এবং স্থানীয় অর্থনীতি উভয়কেই চাঙ্গা করবে। পর্যটকদের সুবিধার পাশাপাশি, নতুন রেলপথ কামারপুকুরের বাসিন্দাদের জন্য ভ্রমণকে আরও সহজ করে তুলবে। তারা বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং দিঘার মতো কাছাকাছি স্থানে ভ্রমণ করতে সক্ষম হবে।
রেলওয়ে উন্নয়নে গ্রামবাসীদের প্রতিক্রিয়া
রেলওয়ে প্রকল্পের খবর কামারপুকুরের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সঞ্চার করেছে। কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজদীপ দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, এটি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি। এলাকার অনেক মানুষ কৃষক, এবং রেলপথ তাদের পণ্য সহজেই শহরে পরিবহনে সহায়তা করবে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ সহজ করে তুলবে, যার ফলে স্থানীয় ব্যবসার জন্য আরও ভালো ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি হবে। কামারপুকুরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ ব্যানার্জি উল্লেখ করেছেন যে বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত রেললাইন ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে। তিনি আশাবাদী যে বড় গোপীনাথপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেললাইনটি সম্পন্ন হলে, বিষ্ণুপুর এবং জয়রামবাটির মধ্যে কামারপুকুর হয়ে সরাসরি ট্রেন পরিষেবা শীঘ্রই চালু হবে। এটি কেবল সময় সাশ্রয় করবে না বরং সকলের জন্য ভ্রমণ খরচও কমাবে।
অতএব, যদি সবকিছু পরিকল্পনা অনুসারে চলে, তাহলে শীঘ্রই জয়রামবাটি হয়ে বিষ্ণুপুর এবং কামারপুকুরের মধ্যে রেলপথ চলাচল করবে। উপরন্তু, ভবদিঘির সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে, কামারপুকুর থেকে হাওড়া পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল করতে পারে।