কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের চিন্তার দিন শেষ, ডবল হতে পারে বেতন! কবে থেকে চালু অষ্টম বেতন কমিশন?

8th Pay Commission

কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের চিন্তার দিন শেষ, ডবল হতে পারে বেতন! কবে থেকে চালু অষ্টম বেতন কমিশন?

Shree Bhattacharjee

Published on:

শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের জন্য অষ্টম বেতন কমিশনের অপেক্ষা আরও তীব্র হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমন সময়ে অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি কর্মীদের বেতনে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার ফলে তাদের আর্থিক অবস্থারও উন্নতি হবে। এই কমিশন প্রায় ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় কর্মচারী এবং ৬৫ লক্ষ পেনশনভোগীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

8th Pay Commission: ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরে সম্ভাব্য পরিবর্তন

কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর, যা মূল বেতন নির্ধারণ করে। সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ২.৫৭, যার কারণে ন্যূনতম বেতন ৭,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮,০০০ টাকা হয়েছে। অষ্টম বেতন কমিশনের ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা করা হচ্ছে। তিনটি সম্ভাব্য ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর, ১.৯২, ২.০৮ এবং ২.৮৬ নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। যদি অষ্টম বেতন কমিশনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৮৬ হয়, তাহলে ন্যূনতম মজুরি ১৮,০০০ টাকা থেকে ৫১,৪৮০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে কর্মীদের আর্থিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে।

কত টাকা বাড়তে পারে বেতন?

অষ্টম বেতন কমিশনের অধীনে, কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর, মহার্ঘ ভাতা এবং অন্যান্য ভাতা সংশোধনের মাধ্যমে এই বৃদ্ধি করা হবে। পূর্ববর্তী বেতন কমিশনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, এবারও কর্মচারীদের বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, যার ফলে কর্মীদের আর্থিক স্থিতিশীলতা আসবে এবং তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

বেতনের পাশাপাশি এই সুবিধাও পাবেন

অষ্টম বেতন কমিশন কেবল বেতন বৃদ্ধি করবে না বরং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এবং ভাতাগুলিতেও উন্নতি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বাড়ি ভাড়া ভাতা (HRA), পরিবহন ভাতা, শিক্ষা ভাতা এবং চিকিৎসা সুবিধা। অতিরিক্তভাবে, কাজের পরিবেশ, পদোন্নতির নিয়ম এবং অবসরকালীন সুবিধাগুলিও সংশোধন করা হতে পারে।

অষ্টম বেতন কমিশনের কারণে বেতন বৃদ্ধির প্রভাব কেবল কর্মচারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর প্রভাব সমগ্র অর্থনীতিতে পড়বে। যখন কোটি কোটি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের হাতে আরও বেশি টাকা থাকবে, তখন তাঁরা আরও বেশি ব্যয় করবে, যার ফলে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এটি অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের দিকে পরিচালিত করবে। অধিকন্তু, বেশি ব্যয়ের অর্থ আরও বেশি কর রাজস্ব হবে, যা সরকারের আর্থিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

অষ্টম বেতন কমিশন কেবল বর্তমান কর্মচারীদের জন্যই নয়, পেনশনভোগীদের জন্যও উপকারি হবে। পেনশন বৃদ্ধির পাশাপাশি চিকিৎসা সুবিধা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি বয়স্ক পেনশনভোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে এবং তাদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনে সহায়তা করবে। পেনশন বৃদ্ধি তাদের ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির সাথে মানিয়ে নিতেও সাহায্য করবে।

কবে চালু হতে পারে অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission)?

ভারত সরকার সাধারণত প্রতি ১০ বছর অন্তর একটি নতুন বেতন কমিশন গঠন করে। সপ্তম বেতন কমিশন ১ জানুয়ারী ২০১৬ থেকে কার্যকর করা হয়েছিল এবং এর মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত থাকবে। অতএব, অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি ২০২৬ সালের জানুয়ারী থেকে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খবর অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশন ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে কাজ শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এর সুপারিশগুলি প্রস্তুত এবং বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়াটি প্রায় ১৮ মাস সময় নিতে পারে। অতএব, অনুমান করা হচ্ছে যে এটি ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়িত হতে পারে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গিয়েছে যে বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন কখনও কখনও বিলম্বিত হতে পারে, কারণ এর সাথে বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক এবং আর্থিক দিক জড়িত। তাই ‘দিল থমকে ব্যায়ঠিয়ে’ বেতন নিশ্চয় বাড়বে।

কবে DAর পরবর্তী কিস্তি ঘোষণা করা হবে?

প্রতিটি নতুন বেতন কমিশনের সাথে মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) পুনর্নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে, সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে মহার্ঘ্য ভাতা ৫৩ শতাংশ, এবং আগামী সময়ে এটি আরও ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৫ সালের জুলাই মাসে আরেকটি সংশোধনী আসতে পারে। তবে, অষ্টম বেতন কমিশনে মহার্ঘ্য ভাতা শূন্য থেকে পুনরায় চালু করা হবে। এর অর্থ হল নতুন কমিশনে মহার্ঘ্য ভাতা নতুন করে নির্ধারণ করা হবে। এই প্রক্রিয়াটি কর্মীদের মুদ্রাস্ফীতি অনুসারে তাদের বেতন সমন্বয় করার সুযোগ প্রদান করবে, যদিও এর প্রভাব প্রাথমিকভাবে একই রকম নাও হতে পারে।

সঙ্গে থাকুন ➥