পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে সফর করেন। বিশেষ করে দূরপাল্লার যাত্রার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক যাতায়াতের মাধ্যম হল ট্রেন। এতদিন যাত্রার সময় আলাদা ও ফেরার সময় আলাদা টিকিট কেটে অভ্যস্ত ছিল সকলেই। তবে এবার জানা যাচ্ছে চাইলে একেবারেই দুটি যাত্রার টিকিট কাটা যাবে। কিভাবে? জানতে আজকের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
একবার টিকিট কেটেই করা যাবে ডাবল যাত্রা!
আসলে ব্রেক জার্নি টিকিট হিসাবে এভাবে যে কেউ যাত্রা করতেই পারেন। তাহলে যদি যাত্রার পর ১-২ বাদেও ফিরতে হয় তাহলেও কোনো অসুবিধা হয় না। এক্ষেত্রে কি কি সুবিধা যেতে পারে? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
ব্রেক জার্নি টিকিটের সুবিধা
আপনি যদি ব্রেকজার্নি টিকিট কাটেন তাহলে একাধিক সুবিধা পেতে পারেন। সেগুলি হল নিম্নরূপ:
- আপনি যদি কোনো কারণে হাওড়া থেকে দিল্লি যেতে চান আর মাঝে পাটনাতে নেমে এক দিনের কাজ মেটাতে হবে। এক্ষেত্রে যদি আলাদা করে হাওড়া টু পাটনা টিকিট কাটেন ফের পাটনা টু দিল্লি তাহলে অপেক্ষাকৃত বেশি টাকা খরচ হবে। কিন্তু যদি আপনি ব্রেক জার্নি করেন তাহলে পাটনাতে নেমে কাজ মিটিয়ে পরের দিন ট্রেন ধরতে পারবেন এক টিকিটেই। ফলে বেশ কিছু টাকা বেঁচে যাবে।
- ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও এই টিকিট খুবই সুবিধাজনক। যদি কিছু দূরত্ব অন্তর ঘুরতে যাওয়ার থাকে তাহলে কিদুটি স্টেশনের মধ্যে ১ দিনের গ্যাপ রেখে নিশ্চিন্তে ঘুরে নিতে পারবেন।
কিভাবে কাটবেন ব্রেক জার্নি টিকিট?
সুবিধার কথা তো হল, এবার আসা যাক কিভাবে এই ধরণের টিকিট কাটা যায় সেই ব্যাপারে। আপনি যদি ব্রেক জার্নি টিকিট কাটতে চান তাহলে নিচে দেওয়া পদ্ধতি ফলো করতে হবে,
- প্রথমেই আপনাকে রিজার্ভেশন কাউন্টারে যেতে হবে। কারণ এই টিকিট অফলাইনেই পাওয়া যাবে।
- কাউন্টারে গিয়ে প্রথমেই ফর্ম নিয়ে নিতে হবে। তারপর ‘Onward/Return Journey Details’ এর অংশটি ভালো করে পূরণ করতে হবে। সেখানেই কোথা থেকে কোথায় যাবেন মাঝে কোথায় নামবেন ও তারপর কবে স্টেশনে ট্রেন ধরবেন ট্রেন নাম্বার সমস্ত কিছু লিখতে হবে।
- এছাড়াও ঐ ফর্মের মধ্যেই নিজের নাম, ফোন নাম্বার দিয়ে জমা দিলেই ব্রেক জার্নি টিকিট পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত রোয়েসে সেগুলিকেও মাথায় রাখতে হবে।
ব্রেক জার্নি টিকিটের কাটার জন্য শর্ত
যদি আপনি ব্রেক জার্নি টিকিট কাটতে চান তাহলে নিচে দেওয়া শর্তগুলিকেও মাথায় রাখতে হবে।
- যাত্রা শুরু থেকে শেষের মাঝে যেখানে ব্রেক জার্নি নেবেন সেখানে ৪৮ ঘন্টার বেশি থাকা যাবে না।
- প্রথম টেন থেকে নামার পরেই আপনাকে স্টেশন মাস্টার বা টিকিট পরীক্ষকের থেকে সময় লিখিয়ে নিতে হবে। সেই সময় থেকেই ৪৮ ঘন্টা গোনা শুরু হবে।
- ব্রেক জার্নিতে দুটো রিজার্ভেশন করা হয়। তাই এর মাঝের কোনো স্টেশনে নামতে পারবেন না।
- নূন্যতম ৫০০ কিমি পরেই ব্রেক নেওয়া যায়। তাই যদি আপনার গন্তব্য ৫০০ কিমির কম হয় তাহলে ব্রেক জার্নি টিকিট কাটতে পারবেন না।
আরও পড়ুনঃ কয়েকমাসের মধ্যে ৫০ ডিগ্রি ছুঁতে পারে পারদ, এমন সময় ‘কুল রুফ’ই সহজ সমাধান
- আপনি ১০০০ কিমিতে একবার ব্রেক জার্নি করতে পারবেন। যদি দূরত্ব ১০০০ কিমির বেশি হয় তাহলে দুটি স্টপেজ নিতে পারেন। তবে রাজধানী, বন্দে ভারত অশতাব্দীর মত ট্রেনে বেক জার্নির সুবিধা নেই।
- যেহেতু দুটো এক্ষেত্রে দুটি আলাদা যাত্রা হয় তাই দুটি আলাদা টিকিট প্রদান করা হয়। আপনাকে যাত্রা শেষ হওয়া পর্যন্ত দুটি টিকিটই নিজের কাছে রাখতে হবে।
এই সমস্ত নিয়ম মাথায় থাকলেই আপনি নিশ্চিন্তে ব্রেক জার্নি করতে পারবেন।