পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ সময়ের সাথে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই প্রযুক্তিগত উন্নতি হয়েছে। এই যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে আগে অ্যানালাগ মিটার ব্যবহার হত। বিগত এক দশকে সেটার বদলে প্রতিটা ঘরেই এসে গিয়েছে ডিজিটাল মিটার। তবে এবার বাজারে হাজির স্মার্ট মিটার। ইতিমধ্যে দেশের বেশ কিছু রাজ্য এমনকি পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে বহু বাড়িতেই এই স্মার্ট মিটার লাগানো হয়ে গিয়েছে। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে আন্দোলন।
স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে শুরু আন্দোলন
স্মার্ট মিটারের ক্ষেত্রে মাসের শেষ বিল দেওয়া যায় না। বরং আগে থেকেই মোবাইল রিচার্জের মত টাকা দিতে হয় তবেই পাওয়া যায় বিদ্যুৎ। এক্ষেত্রে কত টাকার বিদ্যুৎ পুড়ছে, কত মিটার ভাড়া ও ফিক্সড চার্জ নেওয়া হচ্ছে তার কিছুই বোঝা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ একটা বড় অংশের উপভোক্তাদের।
গোটা দেশেই স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে এহেন প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি এই নিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে আন্দোলনকারীদের যৌথ মঞ্চ। তাদের মতে, সঠিকভাবে চার্জ বোঝা না যাওয়ায় আদতে মানুষের পকেট ফাঁকা করছে স্মার্ট মিটার।
পশ্চিমবঙ্গেও বসেছে ১.২৫ লক্ষ স্মার্ট মিটার
দেশের বাকি রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গেরও বেশ কিছু জায়গায় স্মার্ট মিটার বসেছে। সরকারের মতে, ১.২৫ লক্ষ স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে। মূলত সরকার দফতর ও সংস্থাগুলিতে এমনটা করা হয়েছে বলে জানায় হয়েছে। যদিও প্রশাসনের মতে এই সংখ্যা আরও বেশি প্রায় ১.৬৫ লক্ষের কাছাকাছি।
স্মার্ট মিটার বসাতে ইচ্ছুক CESC ও
পশ্চিমবঙ্গে CESC এর তরফ থেকে নিন্জস্ব এলাকায় স্মার্ট মিটার বসানোর জন্য ২০২৩ সালের শুরুতেই আবেদন করা হয় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক কমিশনের কাছে। কিন্তু পরিকাঠামোগত অভাব রয়েছে বলে সেটা খারিজ করে দিয়েছিল কমিশন। তবে কি ফের আবেদনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে? এই বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি CESC।
জোর করেই বসছে স্মার্ট মিটার দাবি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠনের
রাজ্যের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার তরফ থেকে সুব্রত বিশ্বাস জানাচ্ছেন, গ্রাহকদের স্বার্থবিরোধী এই মিটার সমস্ত রাজ্যই লাগাতে শুরু করেছে। পশ্চমবঙ্গের মধ্যমগ্রাম, বারাসাত থেকে কল্যাণী সহ বেশ কিছু শহরে এই মিটার লাগানোর অভিযোগ মিলেছে। বিদ্যুৎ আইন ২০০৩ অনুযায়ী যাঁরা নিজে থেকে ইচ্ছুক তারাই এই মিটার নিতে পারেন, অথচ বারাসাত এলাকার এক বাসিন্দার মতে, জোর করেই স্মার্ট মিটার দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পড়ুয়ারা পাবে ১২০০০ টাকা, শুরু হল নবান্ন স্কলারশিপে আবেদন, জেনে নিন পদ্ধতি
সুব্রতবাবু জানান, স্মার্ট মিটারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে গেলে আগে থেকে টাকা দিতে হয়। তাই জবাবদিহি করার প্রশ্নই নেই। এদিকে প্রশাসনের পাল্টাযুক্তি, এই ক্ষেত্রে গ্রাহকরাই বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়নগরণ করবেন। অন্যদিকে দেশের বিদ্যুৎ গ্রাহক সংগঠন AIECA এর সভাপতি স্বপ্ন কুমার ঘোষও এই নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।