পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ সময়ের সাথে প্রযুক্তির উন্নতি হওয়ায় ব্যাঙ্কিং থেকে টাকা লেনদেন করার অনেক সুবিধা হয়ে গিয়েছে। তবে একইভাবে তাল মিলিয়ে বেড়েছে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাংক জালিয়াতি ও ফ্রড (Bank Fraud)। এবার সেই ফ্রডের তদন্ত করতে গিয়েই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। খোদ ব্যাংকের কর্মীরাই জড়িত জালিয়াতির সাথে! খবর প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমত চমকে উঠছে আমজনতা।
ব্যাংক জালিয়াতিতে জড়িত ব্যাংকের অস্থায়ী কর্মীরাই
যেমনটা জানা যাচ্ছে, গুরুগ্রাম শাখার একটি বেসরকারি ব্যাংকে অস্থায়ী কর্মী নিযুক্ত করা হয়েছিল গ্রাহকদের টাকার লেনদেন মোবাইলে দেখা সেট করে দেওয়ার জন্য। এদিকে ব্যাংকের কম্পিউটার থেকে অ্যাকাউন্ট ডিটেলসের ছবি তুলে জালিয়াতিদের কাছে পাঠিয়ে দিত সে। এভাবেই কয়েক হাজার গ্রাহকের অ্যাকাউন্টার তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে করোনাকালে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়েছিল প্রতারকেরা।
ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে ৩৩,১৬৫ কোটির জালিয়াতি
এই ঘটনার পর কয়েক বছর কেটে গিয়েছে, বাজারে নতুন ফ্রড হাজির হয়েছে। আজকাল ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে ব্যাংক ম্যানেজার সেজে বা পুলিশ অফিসার সেজে মানুষের থেকে টাকা হাতানো হচ্ছে। বিগত কয়েক মাসে প্রায় ৩৩,১৬৫ কোটি টাকা উধাও হয়েছে সাধারণ মানুষের অ্যাকাউন্ট থেকে। যার ফলে মানুষকে সচেতন করতে বর্তমানে ফোন করলেই শোনা যায় সাবধানতা বার্তা।
অস্থায়ী ব্যাংকের কর্মীরাই জড়িত জালিয়াতির সাথে
ইতিমধ্যেই এই ধরণের জালিয়াতির তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তে উঠে এসেছে, ব্যাংকের আউটসোর্সিং স্টাফ বা থার্ড পার্টি সংস্থার কর্মীরাই এই ধরণের কাজে সাহায্য করছে। কারণ ব্যাংকে কাজের সময় সেই ব্যাংকের সার্ভারের লগ ইন আইডি থাকে তাদের। ফলে নিশ্চিন্তে ডেটাবেস থেকে অ্যাকাউন্টার তথ্য দেখতে পেয়ে যান।
এই তথ্যগুলি সাইবার অপরাধীরা ও প্রতারকেরা মোটা টাকা দিয়ে কিনে নেন। এরপর বিভিন্ন প্রকার জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির মতে, এতদিন হরিয়ানার নূর এলাকা ছিল প্রতারকদের হাব। তবে এবার, উত্তরপ্রদেশের মধুর, রাজস্থানের জয়পুর, গুজরাটের সুরাট থেকে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর হয়ে উঠেছে তাদের নতুন আস্তানা।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট ওপেনিংয়ের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অন্যের ডকুমেন্টস দিয়েই এই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হচ্ছে। তাই অস্থায়ী কর্মীদের ডকুমেন্ট দেখার মত কাজ যাতে না দেওয়া হয় তার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে।