শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর এবং জয়রামবাটির স্থানীয়দের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্ন বাস্তব হতে চলেছে। নতুন বিষ্ণুপুর-জয়রামবাটি রেলপথ শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে, যা এই অঞ্চলগুলিতে উন্নত যোগাযোগ এবং ভ্রমণের সুবিধা আনবে। তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ প্রকল্পের (Indian Railways) একটি অংশ হল এই রেলপথ এবং স্থানীয়রা এর উদ্বোধনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
স্থানীয়দের একটি স্বপ্ন হল বাস্তব
ঐতিহাসিক মন্দিরের জন্য পরিচিত বিষ্ণুপুরকে বিখ্যাত তীর্থস্থান জয়রামবাটির সাথে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে চালু হতে চলেছে এই রেলপথ। রেলপথটি স্থানীয়দের নিকটবর্তী শহরগুলিতে ভ্রমণ এবং তীর্থযাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করা সহজ করে তুলবে। জয়রামবাটি স্টেশনে একটি টিকিট কাউন্টার সহ নতুন অবকাঠামো, ‘মাতৃমন্দির’-এর আদলে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে নির্মিত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “মা সারদা আগে বিষ্ণুপুর থেকে কলকাতা ট্রেনে যাতায়াত করতেন, কিন্তু এখন এই সুবিধা জয়রামবাটিতেও পাওয়া যাবে। এর ফলে কলকাতা থেকে আগত তীর্থযাত্রীরা এবং এলাকার স্থানীয় মানুষ উভয়ই উপকৃত হবেন।” জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরের মহারাজ স্বামী শিবুরূপানন্দও তার আনন্দ ভাগ করে নিয়ে বলেন, “আমি ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে বসবাস করছি। যোগাযোগ উন্নত করার জন্য জয়রামবাটিতে রেললাইন খোলা হচ্ছে, এটা অসাধারণ লাগছে। এই প্রকল্পের জন্য জমিও আমরা গর্বের সাথে হস্তান্তর করেছি, এবং আমরা তীর্থযাত্রীদের কীভাবে উপকৃত করবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে কীভাবে চাঙ্গা করবে তা দেখার জন্য উত্তেজিত।”
রেলপথ চালুর জন্য প্রস্তুত
বিষ্ণুপুর-জয়রামবাটি রেল পরিষেবা শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে। স্টেশনগুলির নাম ইতিমধ্যেই বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দিতে লেখা হয়েছ, যা ইঙ্গিত দেয় যে রেলপথটি পরিচালনার জন্য প্রায় প্রস্তুত। এই প্রকল্পটি কেবল একটি পরিবহন মাইলফলক নয় বরং এই অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে একটি বড় পদক্ষেপও বটে। এ প্রসঙ্গে গোপীনাথপুরের অনিমেষ মুখার্জি বলেন, এই প্রকল্পের অগ্রগতিতে আমরা রোমাঞ্চিত। ভবদীঘির সমস্যা সমাধান হয়েছে, এবং ভাবতে অবাক লাগে যে একদিন আমাদের এলাকায়ও ট্রেন চলবে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টার ফলে এটি একটি স্বপ্ন ছিল যা এখন বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।
বলে রাখি, জয়রামবাটি স্টেশন ছাড়াও, বড় গোপীনাথপুর স্টেশনের নির্মাণ প্রায় সম্পূর্ণ, যা রেল পরিষেবাকে আরও উন্নত করবে বলে আশা করা যায়। প্রকল্পটির লক্ষ্য শহরগুলির মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করা এবং বাসিন্দা এবং দর্শনার্থীদের জন্য ভ্রমণকে আরও সুবিধাজনক করে তোলা।