পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে ভারতের সবচেয়ে বড় আক্রমণ ‘অপারেশন সিঁদুর’, সম্ভব হল কীভাবে?

Operation Sindur

পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে ভারতের সবচেয়ে বড় আক্রমণ ‘অপারেশন সিঁদুর’, সম্ভব হল কীভাবে?

Shree Bhattacharjee

Published on:

শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: দেশবাসীর মুখে একটাই নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindur)। মধ্যরাতে পাকিস্তানের উপর বিমান হামলা চালিয়ে ভারত পহেলগাম হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে এবার। জানা গিয়েছে ভারতীয় আক্রমণে প্রায় ৮০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে এবং কয়েক ডজন আস্তানা ধ্বংস করা হয়েছে। ২৫ মিনিট ধরে চলা ভারতের এই অভিযানটি ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সর্ববৃহৎ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। এটি ১৯৭১ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় সামরিক আক্রমণও। কিন্তু রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে এই প্রতিশোধের হুঙ্কার কীভাবে দিয়েছে ভারত! জানলে অবাক হবেন।

আমরা সবাই জানি যে এই অভিযানের মাধ্যমে বিশাল ভৌগোলিক অঞ্চল জুড়ে সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুর এবং লাহোরের উত্তর উপকণ্ঠে শেখপুরার মুরিদকে থেকে শুরু করে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ( POK ) মুজাফফরাবাদ এবং কোটলি পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের আস্তানা। বাহাওয়ালপুর এবং মুজাফফরাবাদের মধ্যে ৯৭০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব রয়েছে। ভারত মুরিদকেতে অবস্থিত ২০০ একরেরও বেশি জমি জুড়ে বিস্তৃত লস্কর-ই-তৈয়বার সদর দফতরও ধ্বংস করেছে বলে জানা গিয়েছে।

১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথম (Operation Sindur)

১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর ভারত পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গভীরে আক্রমণ করেছে এই প্রথমবার। উল্লেখ্য, পাঞ্জাবকে পাকিস্তানের শাসন ব্যবস্থার রাজনৈতিক ও সামরিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিও এই প্রদেশ থেকে তাদের বেশিরভাগ কার্যকলাপ পরিচালনা করে বলে জানা যায়। ভারত যে ৯টি স্থান ধ্বংস করেছে তার মধ্যে ৪টি পাঞ্জাবেরই বাহাওয়ালপুর, শিয়ালকোট এবং শেখুপুরা জেলাও রয়েছে।

মাত্র ২৫ মিনিটে ৯ সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস

ভারত রাত ১:০৫ মিনিটে অভিযান শুরু করে এবং মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যে ৯৭০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে ছড়িয়ে থাকা ৯টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করে। এর জন্য, ভারতীয় সেনাবাহিনী SCALP ক্রুজ মিসাইল এবং হ্যামার স্মার্ট বোমার মতো উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। বিশেষ বিষয় হলো, এই আক্রমণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনও ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পাইলট থেকে বিমান পর্যন্ত সবাই নিরাপদে আছেন। এই অভিযানে ভারত কমপক্ষে ৮০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে জৈশ-ই-মোহাম্মদ প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্য এবং চারজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীও রয়েছেন বলে খবর।

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে সার্জিকাল স্ট্রাইক, অপারেশন সিঁদুরে ছারখার পাকিস্তনের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি

পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে ভারতের সবচেয়ে বড় আক্রমণ কীভাবে সম্ভব হল?

সূত্রমতে, এই আক্রমণটি দ্বিমুখী ছিল, আকাশে বিমান বাহিনী এবং স্থলে সেনাবাহিনী জড়িত ছিল। তার মানে পাকিস্তান দুই দিক থেকে ঘিরে ছিল এবং আক্রমণ করা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুসারে, সরকারি সূত্র জানিয়েছে যে ভারতীয় বিমান বাহিনী আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছে। সূত্র জানায়, পাকিস্তানের সন্ত্রাসকে সমর্থন বন্ধ করার জন্য ইসলামাবাদকে একটি সতর্কবার্তা দেওয়া জন্যই দুই সেনাবাহিনীর বহুমুখী আক্রমণ চালায় ভারত। উল্লেখ্য, আক্রমণ শুরুর আগে, নয়াদিল্লি প্রধান দেশগুলির কাছ থেকে কূটনৈতিক সমর্থন পেয়েছিল। ভারত আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া এবং ফ্রান্সের কাছ থেকে প্রকাশ্য সমর্থন পেয়েছিল। তুরস্ক ছাড়া আর কোনও দেশ প্রকাশ্যে ইসলামাবাদকে সমর্থন করেনি।

সঙ্গে থাকুন ➥