শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: আগের অনুমানের চেয়ে অনেকে আগেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে মহাবিশ্ব (Universe Destruction)। বিজ্ঞানীদের একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে এমনটাই। নেদারল্যান্ডসের র্যাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যানো ফ্যালকের দল জানিয়েছে, এটি ১ পঞ্চাশ লক্ষ বছরে (১ এর পরে ৭৮টি শূন্য) ঘটবে। এটি তখন ঘটবে যখন শেষ তারাগুলো নিভে যাবে এবং কৃষ্ণগহ্বর এবং নিউট্রন তারাগুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করছে।
হকিং বিকিরণের রহস্য কী?
১৯৭৪ সালে, স্টিফেন হকিং পরামর্শ দিয়েছিলেন যে কৃষ্ণগহ্বর ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয় এবং অদৃশ্য হয়ে যায়, যাকে হকিং বিকিরণ বলা হয়। হ্যানো ফ্যালকের দল এই তত্ত্বটিকে আরও ব্যাখ্যা করে বলেছে যে নিউট্রন তারা এবং শ্বেত বামনরাও বাষ্পীভূত হতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি মহাবিশ্বের শেষকে আরও কাছে নিয়ে আসতে পারে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে এটি মহাবিশ্বের সর্বোচ্চ বয়সের একটি অনুমান।
সূর্য কি পৃথিবীকে গ্রাস করবে?
প্রায় ৫ বিলিয়ন বছর পর, আমাদের সূর্য এতটাই প্রসারিত হবে যে এটি পৃথিবীকে গ্রাস করে ফেলবে। এটি মহাবিশ্বের ধ্বংসের অনেক আগেই আমাদের সৌরজগৎকে ধ্বংস করে দেবে। বিজ্ঞানীদের মতে, সূর্য একটি লাল দৈত্য নক্ষত্রে পরিণত হবে। এই সময়ের মধ্যে, পৃথিবীতে জীবন অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ছায়াপথগুলোর কী হবে?
১৫০-২০০ বিলিয়ন বছর পর, মহাবিশ্ব এতটাই প্রসারিত হবে যে অন্যান্য ছায়াপথ আর দৃশ্যমান হবে না। ১৭ ট্রিলিয়ন বছরে, এমনকি শেষ নক্ষত্রগুলিও অদৃশ্য হয়ে যাবে। সেই সময় মহাবিশ্বে আলো বা শক্তি থাকবে না। এটি হবে মহাবিশ্বের সম্পূর্ণ সমাপ্তির সূচনা।
আরও পড়ুন: ভয়ানক বিপদ! ঘরে ঘরে ঢুকে গেল নীরব ঘাতক, সত্যি হল বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী
নক্ষত্রের শেষ কি নিশ্চিত?
নিউট্রন তারাগুলি ১০⁶⁸ বছরের মধ্যে বাষ্পীভূত হয়ে অদৃশ্য হয়ে যাবে। এই নক্ষত্রগুলি অত্যন্ত ঘন, কিন্তু হকিং বিকিরণের মতো প্রভাবগুলি ধীরে ধীরে এগুলি ধ্বংস করবে। এই প্রক্রিয়া মহাবিশ্বকে আরও ঠান্ডা এবং শূন্য করে তুলবে। বিজ্ঞানীরা এটিকে মহাবিশ্বের ধ্বংসের একটি পর্যায় বলে মনে করেন।
অতিবৃহৎ কৃষ্ণগহ্বর অদৃশ্য হয়ে যাবে!
ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলগুলি ১০⁹⁶ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু হকিং বিকিরণের কারণে এগুলোও ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাবে। এর পরে, মহাবিশ্বে কেবল উপ-পরমাণু কণা এবং বিকিরণ অবশিষ্ট থাকবে। এটি হবে মহাবিশ্বের দীর্ঘতম এবং শেষ পর্যায়।
তারারা আর তৈরি হবে না!
নতুন গবেষণা অনুসারে, মহাবিশ্বে নতুন তারা তৈরির প্রক্রিয়াও ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে। এর পরে, মহাবিশ্বে কেবল মৃত তারা এবং শূন্যতা অবশিষ্ট থাকবে। এই পরিস্থিতি মহাবিশ্বকে সম্পূর্ণ ঠান্ডা এবং নিষ্ক্রিয় করে তুলবে।
আপনার জন্য এটি কতটা ভয়ের হতে পারে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে কোটি কোটি বছর পর মহাবিশ্ব শেষ হয়ে যাবে, তাই এখনই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এটি কেবল একটি তাত্ত্বিক অনুমান। ডাচ বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা মহাবিশ্বের প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করবে। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে মহাবিশ্বের সবকিছুই একদিন শেষ হয়ে যাবে।