৯০-র দশকের টলিউড মানেই বুম্বাদা ওরফে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। প্রসেনজিতের পাশাপাশি বোন পল্লবীও টলিপাড়ার পরিচিত নাম। এমতাবস্থায় তাদের জীবনযাত্রা যে বিলাসবহুল হবেই সে তো সকলেরই জানা কথা। কিন্তু জানেন কি টলিপাড়ার এই চ্যাটার্জি পরিবারই চরম অর্থকষ্টে দিন কাটিয়েছিল।
আসলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম জনপ্রিয় তারকা বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জীর সন্তান হওয়ার সুবাদে স্ত্রী রত্না চ্যাটার্জী ভয়ে ভয়ে থাকতেন। আসলে সেইসময় তিনি মনে করতেন যে, অতিরিক্ত ভালোবাসা আর অর্থ প্রাচুর্যের কারণে ছেলেমেয়েরা হয়তো বিপথে যেতে পারে। আর এই কারণেই খুব তাড়াতাড়িই মেয়ে পল্লবীর বিয়ে দিয়ে দেন তিনি।
বছর কয়েক আগে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের টক-শো ‘অপুর সংসার’এ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লবী। সেখানেই খুঁজে আনেন নিজেদের অতীতের কথা। জানা যায়, এমন অনেক গল্প যা হয়তো কেউ কখনও কল্পনাও করতে পারবেনা।
পল্লবী জানান, খুব অল্প বয়স থেকেই বাবা বিশ্বজিতের সাথে স্টেজ শো করতে যেতেন পল্লবী এবং প্রসেনজিৎ। এমনকি সংসার চালানোর জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে চা-ও বিক্রি করেছিলেন দুই ভাইবোন। একসময় মল রোড, দমদমের উপর বড় ডেকচিতে চা বানাতেন পল্লবী। আর সেই চা বিক্রি করতেন দাদা প্রসেনজিৎ।
এভাবে যে টাকা তাদের হাতে এসেছিল তা তুলে দিয়েছিলেন মায়ের হাতে। পল্লবীর কথায়, “ওই যে টাকাটা এসেছিল তখন মনে হচ্ছিল যেন এটাই আমাদের জীবনের বড় পাওনা।” দুই তারকার বয়স অল্প হলেও তখন থেকেই বুঝেছিলেন টাকার মানে। বুঝেছিলেন অর্থের মানে।
এমনকি একসময় তো কলকাতার রাস্তায় ট্যাক্সিও চালিয়েছেন পল্লবী। কলকাতায় পা রাখার পরই তাকে এই কাজ করতে হয়েছিল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পল্লবী কোনোদিনই ভাবতে পারেননি যে তিনি কখনও অভিনয় জগতে আসতে পারবেন। তবে সেই পল্লবীই আজ সগর্বে বলেন, “সেই সময় কেন এখনও মনে হয় আমি আমার নিজের টার্মসে বেঁচেছি। লড়াই করেছি নিজের জন্য।”