শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: গেম-চেঞ্জার প্ল্যান রাজ্যে। জনপ্রিয় রুটে যাতায়াত আরও হয়ে উঠতে প্রস্তুত। এই প্রকল্পটি কেবল ভ্রমণের সময় কমাবে না বরং সংযোগ, বাণিজ্য এবং পর্যটন বৃদ্ধি করে সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নতিতেও সহায়তা করবে। এমনিতেই ভারত তার পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমাগত উন্নতি করছে। এমন সময় আরও একটি নতুন এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ফলে ভ্রমণ দ্রুত এবং আরও দক্ষ হবে। ভারতমালা প্রকল্পের অংশ হিসেবে তৈরি এই নতুন এক্সপ্রেসওয়ে কলকাতা, পাটনা এবং দেওঘরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিকে সংযুক্ত করবে বলে জানা গিয়েছে।
ভারতমালা প্রকল্প: সড়ক যোগাযোগে বিপ্লব আনছে
ভারতমালা প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বড় উদ্যোগ যার লক্ষ্য দেশজুড়ে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যোগাযোগ উন্নত করা। এই প্রকল্পের অধীনে, রক্সৌল-হলদিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হচ্ছে, যা বিভিন্ন অঞ্চলকে সংযুক্ত করবে এবং বাণিজ্য ও পর্যটন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। লক্ষ্য হল বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে আরও ভাল সংযোগ তৈরি করা এবং এই এক্সপ্রেসওয়ে ভ্রমণকারী এবং ব্যবসা উভয়কেই উপকৃত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই রুটের কাজ সম্পূর্ণ হলে, রক্সৌল-হলদিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। কলকাতা, পাটনা, দেওঘর এবং হলদিয়ার মতো প্রধান শহরগুলির মধ্যে দূরত্ব মাত্র ৩ ঘন্টায় এসে দাঁড়াবে। এই উন্নতি কেবল যাত্রীদের জন্যই উপকারী হবে না বরং পণ্য পরিবহনকেও সহজতর করবে, যা অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বলা বাহুল্য, নতুন এক্সপ্রেসওয়ে পর্যটন খাতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে, দেওঘর এবং জামতারা শহরগুলি অনুন্নত, তবে উন্নত সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে, এই স্থানগুলি পর্যটকদের জন্য আরও সহজলভ্য হয়ে উঠবে, স্থানীয় পর্যটনকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। উপরন্তু, এক্সপ্রেসওয়ে বাণিজ্য উন্নত করে এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে সহজে প্রবেশাধিকার প্রদান করে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রক্সৌল-হলদিয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিবরণ:
এই নতুন এক্সপ্রেসওয়ে মোট ৭১৯ কিলোমিটার বিস্তৃত হবে।
এটি বিহারের রক্সৌল থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে শেষ হবে।
এক্সপ্রেসওয়েটি দেওঘর এবং জামতারার মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জেলার মধ্য দিয়ে যাবে।
এর দরুণ সংশ্লিষ্ট অঞ্চল এবং প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে যোগাযোগকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে।
মূল আকর্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
নতুন সেতু এবং রুট: এক্সপ্রেসওয়েটি একটি নবনির্মিত সেতু দিয়ে গঙ্গা নদী অতিক্রম করবে, যা পূর্ব চম্পারণ, বেগুসরাই এবং সমস্তিপুরের মতো বেশ কয়েকটি জেলাকে সংযুক্ত করবে।
উন্নত সংযোগ: চিরায়ানদি, কাটোরিয়া এবং মোহনপুরের মতো জেলা অতিক্রম করার পর, এটি অবশেষে পূর্ব মেদিনীপুর এবং আরামবাগের মধ্য দিয়ে হলদিয়ায় পৌঁছাবে।
বিনিয়োগ এবং খরচ: প্রকল্পের মোট ব্যয় আনুমানিক ৬০,০০০ কোটি টাকা, যা এটিকে এই অঞ্চলের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে।