শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank of India)। মুদ্রাস্ফীতির দিকে তাকিয়ে মুদ্রা নীতি কমিটির এই সিদ্ধান্ত স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে! সাধারণ বাজেটে প্রদত্ত ত্রাণের পর, রেপো রেট কমানোর আশা করা হয়েছিল, যাতে অবশেষে আরবিআই অনুমোদন দিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট (বিপিএস) কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন রেপো রেট ৬.৫% থেকে কমে ৬.২৫% হয়েছে।
সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হল প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম পলিসির সুদের হার কমানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন যে এমপিসির সকল সদস্য রেপো রেট কমানোর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। রেপো রেট শেষবার ২০২০ সালের মে মাসে ০.৪০% কমানো হয়েছিল। অর্থাৎ প্রায় ৫ বছর পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট কমালো। বলা বাহুল্য, এর দরুণ ঋণ আরও সস্তা হবে!
রেপো রেট কীভাবে পকেট বাঁচাবে?
রেপো রেট হল সেই হার যে হারে আরবিআই ব্যাঙ্কগুলোকে ঋণ দেয়। এমন পরিস্থিতিতে, যখন রেপো রেট বৃদ্ধি পায়, তখন ব্যাঙ্কগুলোর জন্য ঋণ ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ গ্রাহকদের ঋণ থেকেও বড় সুদের হার চাওয়া হয়। বিপরীতে, যখন রেপো রেট কমানো হয়, তখন ঋণ সস্তা হওয়ার পথ খুলে যায়। আর এখন যেহেতু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রত্যাশা অনুযায়ী রেপো রেট কমিয়েছে, তাই ঋণ সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, EMI বোঝা কিছুটা হলেও কমতে পারে।
আরবিআই এমএসএফ এবং এসডিএফের হার কমাল
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সুদের হার কমালো। মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এমএসএফ) হার ৬.৭৫% থেকে কমালো ৬.৫০%। এই হারে আরবিআই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়। স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হারও ০.২৫% কমাল ৬%। বাজার থেকে অতিরিক্ত নগদ অর্থ সরিয়ে ফেলার জন্য আরবিআই এসডিএফ ব্যবহার করে। এই কাটছাঁটের কারণে, ব্যাঙ্কগুলো আরবিআইতে তাদের আমানতের উপর কম সুদ পাবে। ফলস্বরূপ, তারা আরবিআইতে টাকা রাখার পরিবর্তে গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারে।
জিডিপি আবার ভালো অবস্থানে ফিরবে!
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষায়, সরকার ২০২৬ সালের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৩% থেকে ৬.৮% অনুমান করা হয়েছে। এবার অবশেষে মুদ্রাস্ফীতি এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন যে ২০২৬ অর্থবছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির পুনরুদ্ধার দেখা যাবে। তিনি বলেন, ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৪% হওয়ার অনুমান করা হয়েছে এবং ২০২৬ অর্থবছরে এটি ৬.৭% হতে পারে। তিনি আরও ভবিষ্যদ্বাণী করে জানিয়েছেন যে আগামী মাসগুলিতে মুদ্রাস্ফীতিও কমতে পারে।