শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। এখানকার নকশায় এখনও ব্রিটিশ স্থাপত্যের উপাদানগুলি দৃশ্যমান। তবে, বছরের পর বছর ধরে, অবহেলার কারণে স্টেশনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। জিনিসপত্র চুরি হয়ে গিয়েছে এবং স্টেশনটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে। একসময় ডুয়ার্স এবং বিহারের মতো জায়গায় ট্রেন চলাচলের জন্য ব্যস্ত কেন্দ্র ছিল এই স্টেশন, কিন্তু আজ এই স্টেশনে মাত্র কয়েকটি ট্রেন থামে।
স্টেশনের বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে, শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের অবস্থা খারাপ। আশেপাশের এলাকা আবর্জনায় ভরা, এবং স্টেশনটি প্রায় পরিত্যক্ত। আগে, স্টেশনটি কলকাতাগামী ট্রেন এবং এমনকি দার্জিলিংগামী বিখ্যাত টয় ট্রেনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টপ ছিল। তবে, আজ, এই ট্রেনগুলি আর টাউন স্টেশন ব্যবহার করে না।
স্টেশনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য কী?
শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষ চন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী এবং বাঘাযতীনের মতো মহান নেতারা একসময় এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করতেন। এটি কলকাতা (দক্ষিণবঙ্গ) কে উত্তরবঙ্গ এবং দার্জিলিংয়ের সাথে সংযুক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ ছিল। আগে, দার্জিলিং মেল বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করত, কিন্তু স্বাধীনতার পরে, রুটটি বিহারের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের জন্য পরিবর্তন করা হয়। সময়ের সাথে সাথে, শিলিগুড়িতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং দুটি প্রধান জংশন – শিলিগুড়ি জংশন এবং নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) – নির্মিত হয়। ফলস্বরূপ, টাউন স্টেশনে থামতে থাকা ট্রেনের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে।
এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ স্টেশনটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। তিনি সম্প্রতি রেলমন্ত্রীর সাথে দেখা করে স্টেশনটিকে ঐতিহ্যবাহী মর্যাদা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। জবাবে, রেলমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে সংশ্লিষ্ট দফতর বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং একটি রিপোর্ট তৈরি করবে। এছাড়াও, শঙ্কর ঘোষ মন্ত্রীর কাছে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা পর্যন্ত লেট নাইট ট্রেন পরিষেবার জন্যও অনুরোধ করেছেন। মন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এই পরিষেবা শীঘ্রই চালু হতে পারে।