শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। গত ২৬ এপ্রিল নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বলেছিলেন, ‘সবার যাতে চাকরি থাকে সেই বিষয়টা আমরা দেখব।’ গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি চাকরিহারা (SSC) শিক্ষাকর্মীদের আশ্বাস জুগিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার মে মাসের শেষের দিকে এসে সে কথাই রাখলেন। চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির কর্মীদের জন্য ভাতার বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন।
বলা বাহুল্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি চলে যায়। শিক্ষক ছাড়া স্কুল চলবে কীভাবে, চিন্তায় পড়ে রাজ্যের সরকার অধীনস্ত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে যাওয়ার জন্য বলেন। সুপ্রিম কোর্টও খানিকটা সহমত পোষণ করেই শিক্ষকদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষাকর্মীরা তখনও বিপাকে। তাঁদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি আদালত। যদিও শিক্ষাকর্মীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পরার আগেই সামনে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট আশ্বস্ত করেছিলেন যে চাকরিহারাদের পাশে থাকবে বাংলার সরকার। এবার সেই কথা রেখে জারি করা হল বিজ্ঞপ্তি।
কত টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে?
ইতিমধ্যেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে এই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫’ নামে একটি প্রকল্পও চালু করেছে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায়ই ভাতা পাবেন চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির কর্মীরা। গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। গ্রুপ ডির কর্মীদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এপ্রিল থেকেই এই ভাতা কার্যকর করা হবে বলেও জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে।
আরও পড়ুন: ‘কোনও সুযোগ নয়’- ‘অযোগ্য’ চাকরিহারাদের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
কীভাবে ভাতা পাবেন?
- স্কুলশিক্ষা বিভাগের অন্তর্গত প্রত্যেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি পেয়ে গিয়েছেন।
- এবার প্রত্যেক সংশ্লিষ্ট কর্মীরা নির্ধারিত ফর্ম (Annexure-A) পূরণ করে প্রধান শিক্ষকের কাছেই ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করবেন।
- সংশ্লিষ্ট ডিআই/এস কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকের আবেদন যাচাই করে দেখবেন ঠিক আছে কিনা, তারপর স্কুলশিক্ষা দফতরে পাঠাবেন।
- এরপর আবেদনপত্রগুলি iOSMS পোর্টালের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।
- তারপর চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য শ্রম দফতরের কাছে পাঠানো হবে আবেদনপত্রগুলি।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের SSC পরীক্ষার সম্পূর্ণ নিয়োগ প্যানেল বাতিল করেছে। দুর্নীতির দায়ে চাকরি খুইয়ে বসেছেন ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। সেই আবহ এখনও চলমান। বাংলার শিক্ষা এখন কাঠগড়ায়!