Papiya Paul

নেই পুঁথিগত শিক্ষা, টেকেনি বিয়ে, নিজের প্রচেষ্টায় এই ব্যবসা করে এখন ৫০০০ মহিলাকে কাজ দিয়েছেন কমল

নিউজশর্ট ডেস্কঃ Success Story Of Indian Women: কঠোর পরিশ্রমই হলো সাফল্যের চাবিকাঠি। আত্মবিশ্বাস আর সঠিক পন্থা অবলম্বন করে নেমে পড়তে হয় ময়দানে। যদিও এই লড়াইটা সবার জন্য সমান হয়না। দারিদ্রতার পাহাড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই লড়াইয়ে। তবে এমন মানুষও দেখেছি যারা এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আজ সাফল্যের বিছানায় বসে আড়মোড়া ভাঙছে। আজ এমনই একজন ব্যক্তির সাথে পরিচয় করাবো পাঠককুলের।

   

পরিচিতি: মহারাষ্ট্রের(Maharastra) ওসমানাবাদ জেলার অন্তর্গত, একটি হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় কমল কুম্ভরের(Kamal Kumbhar)। পরিবারের অবস্থা যখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় তখন পড়াশোনা শেখা বিলাসিতা‌। আর তাই পুঁথিগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এবং খুব অল্প বয়সে বিয়েও হয়ে যায় তার।

জীবনের গল্প: যদিও কমলের সেই বিয়ে খুব বেশিদিন টেকেনি। স্বামীর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বাবার কাছে। কিন্তু যে মেয়েকে স্বামী ঘরে রাখেনি তার ঠাঁই বাবার ঘরেই বা হয় কীভাবে? তাই স্বনির্ভর হওয়ার তাগিদে শুরু করেন চুড়ি বিক্রি। কমলের গ্রামের মহিলারা প্রায়শই তার কাছে চুড়ি কিনতে আসতেন। তাদের সাথে কথা বলে তিনি বুঝতে পারেন যে, প্রায় প্রত্যেকের অবস্থাই তার মত। সকলেই চায় স্বনির্ভর হতে, কিন্তু হাতের কাছে উপায় কিছু নেই।

এমতাবস্থায় চুড়ি বিক্রির সঞ্চয় এবং বাজার থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে মোট ২০০০ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। কোম্পানির নাম দেন ‘কমল পোল্ট্রি অ্যান্ড একতা সখী প্রডিউসার’। ধীরে ধীরে এখানে গ্রামের অন্যান্য মহিলাদেরও নিযুক্ত করতে থাকেন। এতে কমলের ব্যবসার উন্নতি তো ঘটেই, পাশাপাশি গ্রামের অন্যান্য মহিলারাও একটা কর্মস্থল খুঁজে পায়।

এরপর তিনি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্পের অধীনে একজন শক্তি বিশেষজ্ঞের প্রশিক্ষণ নেন। এবং প্রায় ৩০০০ বাড়িতে সোলার ল্যাম্প স্থাপন করেন। শুধু তাই নয়, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মহারাষ্ট্রে যখন খরা দেখা দেয় সেই সময় তিধি শুষ্ক ও অনুর্বর জমি ব্যবহার করে ছাগল পালন শুরু করেন‌। কৃষিকাজ ভালো না হলেও ছাগল চাষ করেই উপার্জনের পথ দেখান গ্রামবাসীকে।

সফলতার গল্প: প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে দেশের প্রতি কমলের অবদানের জন্য FICCI দ্বারা সম্মানিত করা হয়েছিল তাকে । এর পাশাপাশি নীতি আয়োগ কমল কুম্ভরকে Serial Entrepreneur হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। এছাড়াও ২০২২ সালের ৮ মার্চ নারী দিবস উপলক্ষে নারী শক্তি পুরস্কার দেওয়া হয় কমলকে। বর্তমানে প্রায় ৫০০০ নারীকে পরিচালনা করেন তিনি।