Papiya Paul

ডিম বিক্রি করে চলত সংসার, কঠোর পরিশ্রমের পর JEE IIT-তে সফল হয়ে মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করলেন ছেলে

নিউজশর্ট ডেস্কঃ “যে সয় সে রয়” এই কথার আক্ষরিক অর্থ হল যে লড়ে যায় সে থেকে যায়। এই জীবন যুদ্ধের মঞ্চে যে লড়াই করে জয় তারই হয়। আজ এমনই এক যোদ্ধার গল্প শোনাবো আপনাদের, যে শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমের দ্বারা হয়েছে সফল। প্রবল দারিদ্রতার সাথে লড়াই করেও চান্স পেয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে IIT তে।

   

এই IIT তে চান্স পাওয়া মুখের কথা নয়, বহু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী বছরের পর বছর প্রচেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় এই প্রতিষ্ঠানে চান্স পেতে। আর এই প্রতিষ্ঠানে চান্স পেয়েই সফলতার(Success Story) এক নজির স্থাপন করেছে এই ছেলেটি। এই গল্প হল বিহার শরীফের (Bihar Sharif) বাসিন্দা আরবাজ আলমের(Arbaz Alam)। যিনি প্রমাণ করেছেন যে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিজের স্বপ্ন পূরণের জেদ বজায় রাখলে ঠিক তা পূরণ করা সম্ভব। আর এই অদম্য জেদ আর ইচ্ছেশক্তির ওপর ভর করেই তিনি পাশ করে যান JEE IIT-র মতো কঠিন পরীক্ষা।

তবে , আরবাজের এই সফলতার রাস্তাটি মোটেই ছিল না মসৃণ। বরং পথে ছিল অভাবের বহু গর্ত। তাঁর বাবা রাস্তার ধারে ডিম বিক্রি করতেন। কোনোমতে দৈনিক ১০০ টাকা রোজগার করতেন তিনি। সেই আয়কে সম্বল করেই পুরো সংসার চলত। এককথায় বলতে গেলে দুই বেলা ঠিক করে অন্ন সংস্থানও অনেক কষ্ট করে হত তাদের। কিন্তু এই সবের মধ্যেও আরবাজের স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু পরীক্ষার জন্য পড়ার মতো বই কেনার মতো সামর্থ্যও তাঁর পরিবারের ছিল না। লোকের কাছে ধার করে বই পড়তেন তিনি।

তবে এইসব কোন কিছুতেই হার মানেন নি তিনি। কারন তার জীবনে দুইটি লক্ষ ছিল, এক তাঁর পরিবারকে দারিদ্রতার কবল থেকে মুক্ত করা আর দুই IIT তে চান্স পাওয়া। এই পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করতেন আরবাজ। শুধু তাই নয়, বই ধার করেই রাতের পর রাত নিয়েছেন পরীক্ষার প্রস্তুতি। আর এই সবের মধ্যেই তার ভাগ্য আরও খুলে যায়। আরবাজ সান্নিধ্য লাভ করে বিহারের সেলিব্রিটি শিক্ষক আনন্দ কুমারের। তিনি আরবাজকে তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যাচে ভর্তি করে তাঁকে বিনামূল্যে পড়াশোনার পাশাপাশি আরবাজের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করেন।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আরবাজকে। ক্রমশ সফলতার দিকে এগিয়ে যায় তার বিজয় রথ। তিনি তাঁর কঠোর পরিশ্রমের ওপর ভর করে পরীক্ষায় ৬৭ তম স্থান অর্জন করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে JEE দিয়েছিলেন। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, আনন্দ কুমারের সুপার ৩০-র যে ব্যাচটিতে আরবাজ ছিলেন, সেখানে সবাই চমৎকার নম্বর নিয়ে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।