বাংলা টলি (Tollywood) দুনিয়ার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন উৎপল দত্ত (Utpal Dutt)। বহুমুখী প্রতিভাধর এই অভিনেতা আজ ইহজগতে নেই বটে, তবে তার চর্চা এখনও চলে সিনেপ্রেমীদের মধ্যে। কমেডি হোক কিংবা দাপুটে খলনায়ক, প্রত্যেকটা চরিত্রকেই নিখুঁত অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে জীবন্ত করে তোলার এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল উৎপল দত্তের মধ্যে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই কিংবদন্তি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, ১৯২৯ সালের ২৯ শে মার্চ অবিভক্ত বাংলার বরিশালে। জানা যায়, অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও তুখোড় দক্ষ ছিলেন তিনি। জানা যায়, শিলং-এর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুল থেকে পড়াশোনা করে মাত্র ১৬ বছর বয়সে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ইংরাজীতে সাম্মানিক স্নাতক লাভ করেন তিনি।
একদিকে লেখাপড়া, অন্যদিকে অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক, সবে মিলিয়ে খুব দ্রুত এগিয়ে চলেছিল কেরিয়ার। আর তার সাথে জড়িয়ে পড়েছিলেন ইংরেজি থিয়েটারের প্রতিও। অনেকেই হয়তো জানেননা যে, ইংল্যান্ডের বিখ্যাত নাট্য পরিচালক জেফ্রি ক্যান্ডেলের শিষ্য ছিলেন তিনি। নাটক করেছেন দেশ বিদেশের বহু মঞ্চে।
তাই এমনি এমনি তো আর তাকে বাংলা সিনেমার ‘ম্যাজিক ম্যান’ বলা হয় না। থিয়েটারের মঞ্চ থেকে শুরু করে বড় পর্দা সব জায়গাতেই দেখিয়েছেন নিজের দাপুটে অভিনয়ের ঝলক। এই বিষয়ে উৎপল নিজেই বলেছিলেন, ‘আমি শিল্পী নই। নাট্যকার বা অন্য যে কোনও আখ্যা লোকে আমাকে দিতে পারে। তবে আমি মনে করি আমি প্রোপাগান্ডিস্ট। এটাই আমার মূল পরিচয়’।
পরবর্তী সময়ে তিনি শুরু করেন নিজের তৈরি নাট্যদল ‛দ্য অ্যামেচার শেক্সপিয়ারিয়ানস’র। শোনা যায়, এই সময় তিনি প্রেমে পড়েন নাট্য গুরু জেফ্রি ক্যান্ডেলের মেয়ে তথা অভিনেত্রী জেনিফার ক্যান্ডেলের (Jennifer Kendal)। যদিও জেনিফার সেই সম্পর্ক ভেঙে বিয়ে করেন শশী কাপুরকে। এবং কেরিয়ার ছেড়ে সংসারে মনোনিবেশ করেন।
প্রসঙ্গত, এতকিছুর পাশাপাশি এক বিতর্কিত অধ্যায়ও রয়েছে উৎপলের জীবনে। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৬৫ সালে ভারতরক্ষা আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। ছয় মাস তাকে কারাগারে বন্দি রাখা হয়। তবে এই সমস্ত বিতর্ক তার অভিনয় জীবনে ছাপ ফেলতে পারেনি। হীরক রাজা থেকে মগনলাল মেঘরাজের মত একাধিক আইকনিক চরিত্র উপহার দিয়ে গেছেন আমাদের।