শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের জন্য বড় খবর। সুন্দরবনে (Sundarbans) জলের স্তর বাড়ছে হুড়মুড়িয়ে। স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যের উপর এর বড় প্রভাব পড়তে চলেছে! তাই-ই খতিয়ে দেখছেন গবেষকরা। সম্প্রতি, ডায়মন্ড হারবারে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ এবং সুন্দরবনে কর্মরত ব্যক্তিরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। তাঁরা সকলেই একমত যে সুন্দরবনে জলের স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং স্বাভাবিকভাবেই এটি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।
এই মুহূর্তে মোকাবিলায়, সুন্দরবনে, আরও জল প্রবাহিত করার জন্য কিছু বাঁধ ভেঙে ফেলা হচ্ছে, যার ফলে লবণাক্ত জল জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে এবং বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে আগামী ৭০ বছরে, জলস্তর আরও বৃদ্ধি পাবে। এই কারণে, সকলেই মনে করেন যে এই ক্রমবর্ধমান জলস্তর ভবিষ্যতে স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা বোঝার জন্য এখনই গবেষণা শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ।
সব মিলিয়ে, সুন্দরবনে জলের স্তর বৃদ্ধি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। দেখা গিয়েছে যে প্রতি বছর জলস্তর ৩-৭ মিলিমিটার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা ছোট মনে হতে পারে, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব অনেক বেশি। ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সমুদ্রের জল সহজেই স্থলভাগে পৌঁছে যায়, যা সেখানকার মানুষের জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে।
নোনা জল জমিতে প্রবেশ করলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
- নোনা জল জমিতে প্রবেশ করলে নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। এটি কৃষিকাজের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ লবণাক্ত মাটিতে ফসল সঠিকভাবে জন্মাতে পারে না।
- এটি মিঠা জলের উৎসকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যার ফলে মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে পানিশূন্যতা বা নোংরা জলের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- উপরন্তু, ক্রমবর্ধমান জলস্তর ভবিষ্যতে আরও বন্যার কারণ হতে পারে, যার ফলে এলাকায় মানুষের বসবাস এবং কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই, গবেষকরা এখন জলস্তরের এই বৃদ্ধি জনস্বাস্থ্যের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা অধ্যয়নের উপর মনোনিবেশ করছেন। তারা জানতে চান যে জলস্তরের বৃদ্ধির কারণে কী ধরণের রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং কীভাবে স্থানীয় সবকিছুকে রক্ষা করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে আগে থেকেই পদক্ষেপ করা এবং ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে।