পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সিদ্ধান্তে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় সেমেস্টার শুরু হতেই সংস্কৃতের পাঠ্যক্রমে (WBCHSE Syllabus) বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন সেমেস্টার শুরু হওয়ার পরেই এই বদল নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে তৈরি হয়েছে চরম বিতর্ক ও অসন্তোষ।
কোন কোন বিষয়ে পাঠক্রম বদল হল?
- ইউনিট-১ (গদ্য): ‘শ্রীমতী’ (অবদানশতকম্) বাদ দিয়ে ‘রাজবাহনচরিতম্’ (দশকুমারচরিতম্) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- ইউনিট-২ (পদ্য): ‘অভ্যাসবশগং মনঃ’ (শ্রীমদ্ভগবদগীতা) বাদ দিয়ে ‘যোগঃ কর্মসু কৌশলম্’ (শ্রীমদ্ভগবদগীতা) যোগ হয়েছে।
- ইউনিট-৩ (নাটক): ‘বীরঃ সর্বদমনঃ’ (অভিজ্ঞান শকুন্তলম্) বাদ দিয়ে ‘দুর্বাসাসঃ অভিশাপঃ’ (অভিজ্ঞান শকুন্তলম্) রাখা হয়েছে।
- ইউনিট-৫ (ইতিহাস): বরাহমিহির বাদ, পরিবর্তে ব্রহ্মগুপ্তের সংক্ষিপ্ত পরিচয় অন্তর্ভুক্ত।
পড়ুয়া ও অভিভাবকদের উদ্বেগ
পড়ুয়াদের মতে, হাতে মাত্র ৫ মাস সময় রয়েছে, সামনেই তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা। এমতাবস্থায় নতুন সিলেবাসে প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন। বই প্রকাশের দেরি, সিলেবাসে হঠাৎ পরিবর্তন এই সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি অভিভাবকেরাও প্রশ্ন তুলেছেন, যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে তার দায় কে নেবে?
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও বিতর্ক
এদিকে নতুন সিলেবাস ঘোষণার পর ছাত্রসহ শিক্ষকদের একাংশও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সেমেস্টার শুরু হওয়ার পর হঠাৎ পাঠ্যক্রম বদলে যাওয়ার ফলে ক্লাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। অনেক স্কুলে এখনও সংস্কৃত, বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে নতুন বই পৌঁছায়নি। পুরনো সিলেবাসের ভিত্তিতে প্রকাশিত বই ছাত্রছাত্রীরা ইতিমধ্যেই কিনে ফেলেছে। ফলে নতুন করে বই কেনা মানে আর্থিক চাপের সৃষ্টি হবে।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী প্রশ্ন করেন, একটি নির্দিষ্ট প্রকাশনা সংস্থাই নতুন সিলেবাসে বই প্রকাশ করেছে, বাকিরা কেন পুরনো সিলেবাসে বই প্রকাশ করেছে? তাছাড়া বাংলা ও ইংরেজির তৃতীয় সেমিস্টারের বইও স্কুলে আসেনি। সব মিলিয়ে পড়ুয়াদের ভুগতে হচ্ছে।