কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ এবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন রেশন দোকানে যখন-তখন হঠাৎ করেই পৌঁছে যাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীরা, উদ্দেশ্য – রেশনের লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকরা সঠিকভাবে রেশন পরিষেবা পাচ্ছেন কিনা, সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া। বিগত কয়েক বছর ধরেই রেশন সংক্রান্ত একগুচ্ছ অভিযোগ পাওয়ার পর এবার রাজ্যের মানুষদের, তথা রেশন দোকানে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকদের থেকেই সমীক্ষা করে নানান বিষয় তথা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চায় সরকার।
কী জেনে নেওয়া হবে এই সমীক্ষা থেকে?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে যে সমীক্ষা চালানো হবে, তার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র গ্রাহকরা বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ঠিকঠাক করে সঠিক সময়ে পাচ্ছে কিনা তা নয়, এর পাশাপাশি গ্রাহকদের থেকে জেনে নেওয়া হবে প্রাপ্ত খাদ্যসামগ্রীর গুণমান এবং পরিমাণ সম্পর্কে। এর পাশাপাশি ওই সমীক্ষা থেকে জেনে নেওয়া হবে রেশন দোকানের কর্মচারীদের ব্যবহার, দোকানের অবস্থা, অর্থাৎ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কিনা এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে।
কারা করবে এই সমীক্ষা?
একটি সূত্র মাত্রফত জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন রেশন দোকনে গিয়ে গিয়ে এই সমীক্ষা চালাবে রাজ্যের সোশ্যাল অডিট ইউনিটের বিভিন্ন কর্মীরা। বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে গিয়ে এই কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভিলেজ রিসোর্স পার্সনদের ওপর, আর শহরে এই কাজ করবেন প্রশিক্ষিত কর্মচারীরা। এমনকি এই সমীক্ষা চালানোর উদ্দেশ্যে কী কী তথ্য জানতে চাওয়া হবে, সেই বিষয়ে এক সেট প্রশ্নাবলীও ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে সরকারের তরফে।
কোন কোন জায়গায় সমীক্ষা চালানো হবে?
বিভিন্ন সূত্র মারফত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এই সমীক্ষা চালানোর জন্য রাজ্যের ৫৫৯৩টি রেশন দোকানকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে গ্রামাঞ্চলের ৪৫৭৬টি দোকান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এবং শহরাঞ্চলের ১০১৭টি দোকান। অর্থাৎ, খাদ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় রেশন ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ এবং উন্নত করার তাগিদে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ যে প্রশংসনীয়, সে কথা বলাই বাহুল্য।
এই সমীক্ষা প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, “সরকারে এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক এই সমীক্ষা মিটে গেলেই, পর পর পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতিতে রাজ্যের বাকি রেশন দোকানগুলিতে এই কাজ সম্পাদন করা হবে, যার পরিমাণ প্রায় ২১ হাজারেরও বেশি। মোট চারটি ধাপে এই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এর পাশপাশি খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের মানুষ যাতে সঠিকভাবে প্রাপ্য সামগ্রী পায় সেটাই এই সমিক্ষার লক্ষ্য।।”