মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারে শিথিলতা, এবার শিক্ষকরা ফেলবে স্বস্তির নিঃশ্বাস!

WB Teacher Transfer Update

মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারে শিথিলতা, এবার শিক্ষকরা ফেলবে স্বস্তির নিঃশ্বাস!

Srijita Ghosh

Published on:

শ্রীজিতা ঘোষ, কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বহু প্রতীক্ষিত মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফার (WB Teacher Transfer Update) বা পারস্পরিক বদলি প্রক্রিয়ায় অবশেষে বড়সড় শিথিলতা আনল রাজ্য শিক্ষা দফতর। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা সমস্যাগুলোর নিরসনে এবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সরাসরি দেওয়া হল প্রাথমিক ও মধ্য শিক্ষা পর্ষদকে, অর্থাৎ দফতরের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। ২০২২ সালে পারস্পরিক বদলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তা আবার চালু হলেও নানা জটিলতা ও অভিযোগ জমতে থাকে। বিশেষ করে ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা এবং অনুমতির জটিলতার কারণে বহু শিক্ষক আটকে ছিলেন বদলির অপেক্ষায়। এবার সেই জট কাটাতে নয়া নিয়ম চালু করল শিক্ষা দফতর।

নতুন নিয়মে কী কী বদল আসছে?

পোর্টাল লক আর দীর্ঘদিন থাকবে না। এক শিক্ষক অন্য কাউকে মিউচ্যুয়াল বদলির জন্য অনুরোধ জানালেও যদি অপর পক্ষ উত্তর না দেন, তাহলে আগে ওই আবেদনকারী শিক্ষকের প্রোফাইল ‘লক’ হয়ে যেত। এখন থেকে এই লক প্রাথমিক বা মধ্য শিক্ষা পর্ষদের ডিআই বা পর্ষদ নিজে থেকেই খুলে দিতে পারবেন। সম্মতির উত্তর না এলে আবার আবেদন করা যাবে। আগে একবার ‘না’ বা কোনও উত্তর এলে নতুন করে আবেদন করা যেত না। এখন বিশেষ ছাড়ে আবার আবেদন করার সুযোগ থাকবে।

‘উৎসশ্রী’ পোর্টালে প্রতিক্রিয়া না দিলেও আর সমস্যা নেই। অনেক সময় এক পক্ষ হ্যাঁ বললেও অন্য পক্ষ পোর্টালে কিছু না বললে বদলি আটকে যেত। এখন আর তা হবে না। জেলা পরিদর্শক (DI) যদি ব্যবস্থা না নেন, তবে পর্ষদ নিজে থেকেই ব্যবস্থা নেবে। বাধ্যতামূলক হচ্ছে কনফার্মেশন লেটার। আগে ‘উৎসশ্রী’তে আবেদন করলেও কনফার্মেশন লেটার বাধ্যতামূলক ছিল না। এখন থেকে অবশ্যই জমা দিতে হবে। সাধারণ বদলি থেকে পারস্পরিক বদলিতে পরিবর্তনের সুযোগ আসছে। কেউ যদি আগে সাধারণ বদলির জন্য আবেদন করে থাকেন এবং তা দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে, তাহলে তিনি মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফারে আবেদন করতে পারবেন। এতে আগে করা সাধারণ বদলির আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞ ও সংগঠনের মতামত

কিংকর অধিকারী, (সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ) বলেন, ‘শিক্ষা দফতরে বহুবার দাবি জানানো হয়েছিল। এবার তার অনেকটাই বাস্তবায়িত হচ্ছে। তবে এখনো এই নিয়ম বাস্তবে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই দেখার বিষয়।‘ স্বপন মণ্ডল, (সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি) বলেন, ‘আমরা বহুবার ডেপুটেশন দিয়েছিলাম, যার ফলেই এই পরিবর্তন এসেছে। আমাদের অধিকাংশ দাবি মেনে নিয়েছে দফতর।‘

এই পরিবর্তনের ফলে ২০১৬ সাল থেকে জমে থাকা হাজার হাজার বদলির আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি হতে পারে বলে আশা করছেন শিক্ষকমহল। শিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগ বাস্তবিক কার্যকর হলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা তাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানে বদলি হয়ে পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনে স্বস্তি ফিরে পাবেন।আপনি যদি নিজে শিক্ষক হন এবং পারস্পরিক বদলির কথা ভাবছেন, তাহলে এখনই প্রস্তুতি নিন। প্রোফাইল আপডেট, কনফার্মেশন লেটার এবং সম্ভাব্য বদলি সঙ্গীর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখাই হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।

সঙ্গে থাকুন ➥