এবার বর্ষায় নো যাত্রীদুর্ভোগ, আগে থেকেই সতর্ক, একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিল শিয়ালদহ ডিভিশন

Indian Railway Sealdah Division

এবার বর্ষায় নো যাত্রীদুর্ভোগ, আগে থেকেই সতর্ক, একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিল শিয়ালদহ ডিভিশন

Partha Sarathi Manna

Published on:

পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ এবছর বর্ষার মরশুম শুরুর আগেই যে হারে বৃষ্টি হয়েছে তাতে একপ্রকার শ্রাবণের স্বাদ সকলেই। তাছাড়া বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তের জেরে আগামীকালও এমনই আবহাওয়া বজায় থাকবে। তীব্র বৃষ্টির জেরে দৈনন্দিন কাজকর্মে যেমন সমস্যা দেখা দেয় তেমনি ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রেও জল জমা হয়ে সমস্যা তৈরি হয়। তবে এবার আর যাতে তেমনটা না হয় তার জন্য বড় পদক্ষেপ নিল শিয়ালদহ ডিভিশন (Sealdah Division)।

শিয়ালদহ ডিভিশনে স্পেশাল বৈঠক

অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে যেমন রাস্তা ঘটে জল জমে যায় তেমনি ট্রেন ট্র্যাকেও বর্ষার জল জমা হওয়ার ফলে বেশ সমস্যার সৃষ্টি হয়। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ার ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। তবে এবার আর যাতে সমস্যার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য বড় পদক্ষেপ নেওয়া হল। বিগত বুধবার শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএমের নেতৃত্বে একটি জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই বর্ষায় যাত্রী নিরাপত্তা ও ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলি কী কী? জানতে আজকের প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

নেওয়া হল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

১। যে সমস্ত জায়গায় বৃষ্টিতে বিদ্যুতের সমস্যা হতে অপারে সেখানে জেনারেটর বসানো হয়েছে। আর রেলওয়ে ট্র্যাকে যাতে জল জমতে না পারে তার জন্য দ্রুত জল নিষ্কাশন করতে পারে এমন পাম্প বসানো হয়েছে।

২। যাত্রীদের ও রোলিং স্টকের নিরাপত্তার জন্য আরপিএফদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া ৮০০টি স্পেশাল স্যুট বরাদ্দ করা হয়েছে যাতে ঝড় বৃষ্টির সময়েও পরিষেবা দিতে কোনো রকমের অসুবিধার সম্মুখীন না হতে হয়।

৩। বৃষ্টির ফলে যাতে ট্রেনে কোনো ধরণের যান্ত্রিক ত্রুটি না আসে তার জন্য ইলেক্ট্রিকাল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও সিগন্যাল-টেলিকম সরঞ্জামের সঠিকমত রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৪। অন্তত একটি কন্ট্রোল রুম টানা ২৪ ঘন্টাই চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে। সেখান থেকেই সমস্ত বিভাগের কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে নজরদারি চালাবে।

৫। দুর্যোগের সময় ট্র্রেন চললে ওভারহেড তারের জেরে অনেক সময় সমস্যা হয়। তাই আগে থেকেই ওভারহেডের যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণের উপর জোর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর সাথে প্রয়োজনমত জায়গায় টাওয়ার ওয়াগন রেডি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৬। জল গড়িয়ে যে উপর থেকে পরে যাতে প্লাটফর্মে শর্ট সার্কিট না বা বিদ্যুৎপিষ্ট হওয়ার মত দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য স্টেশনের ছাউনি ইন্সপেকশন করে ঠিক থাকে রাখার জন্য বলা হয়েছে।

৭। ১২৪টি উচ্চতা নির্দিষ্ট করা সাবওয়েতে ড্রেনেজ ও পাম্পিংয়ের ব্যবস্থা ঠিক থাকে আছে কি না চেকিং করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সেন্সরের মাধ্যমে জলের লেভেল পর্যবেক্ষণের সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে।

৮। কাঁচড়াপাড়া, রানাঘাট, বহরমপুর, ব্যারাকপুরসহ বিভিন্ন রুটে ঝড়-বৃষ্টিতে লাইনে গাছ পরে যাতে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত না হয় তার জন্য গাছ কাটার জন্য নজরদারি চালানো হবে। একইসাথে ক্যানিং ও ডায়মন্ড হারবার-এর মতো ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় মনসুন পেট্রোলিং চালানোর কথা জানানো হয়েছে।

৯। সোনারপুর, বারাসাত, বনগাঁ, রানাঘাট ও ব্যারাকপুরে রেইন গেজ সিস্টেম বসানো হয়েছে। নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, কৃষ্ণনগর, ব্যারাকপুর, বারাসাত এর মত মোট ৯ টি স্টেশনে বাতাসের গতি ও দিক নির্ধারণের জন্য অ্যানিমোমিটার বসানো হয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥