কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ আধুনিকীকরণের জোয়ার এখন এসে পৌঁছেছে বাড়ির মিটার ঘর পর্যন্ত। আর সেই জোয়ারে পুরনো মিটারের পরিবর্তে এখন বাড়ির মিটার ঘরে জায়গা করে নিচ্ছে স্মার্ট মিটার (Smart Meter)। তবে, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশে স্মার্ট মিটার পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী শুধু দেশ তথা রাজ্যের বিভিন্ন জায়াগ্য জোর কদমে চলছে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ। তবে, স্মার্ট মিটার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকায় গ্রামে গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় এই কাজে মিলছে বাধা। তবে এবার সেই ধারণা কিছুটা হলেও স্পষ্ট করলেন বিদ্যুৎ দফতরের বারাসত ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বাপ্পাদিত্য ঘোষ। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
স্মার্ট মিটারে অনীহা একাধিক জনের
সারা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় চলছে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ। তবে, সাধারণ মানুষের কাছে স্মার্ট মিটার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় অনেকেই ভাবছেন এই মিটার লাগালে হয়তো বেশি আসবে বিদ্যুতের বিল। আবার অনেকেই ভাবছেন, যেহেতু এই স্মার্ট মিটার প্রিপেড (Prepaid Smart Meter), তাই ফোনের যেমন রিচার্জ শেষ হয়ে গেলে আর কোথা বলা যায় না, তেমনই এতেও রিচার্জ ফুরিয়ে গেলে মাঝ রাতে পাওয়া যাবে না বিদ্যুৎ পরিষেবা (Electricity)। এমনই নানা রকম ভয়ে স্মার্ট মিটার লাগাতে নারাজ অনেকে। কিন্তু এসব ধারণা ভিত্তিহীন বলে জানালেন বিদ্যুৎ দফতরের বারাসত ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বাপ্পাদিত্য ঘোষ।
কী জানালেন বাপ্পাদিত্য ঘোষ?
একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে, ওই ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, স্মার্ট মিটার নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। যার সঙ্গে বাস্তবের যোগ নেই। স্মার্ট মিটারে বিদ্যুতের বিল বেশি আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই। বর্তমান দরেই স্মার্ট মিটারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহকরা। শুধমাত্র আগে যেখানে ৩ মাসের বিল একসঙ্গে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছত, সেখানে এখন প্রতি মাসে গ্রাহকরা অনলাইনে বা অ্যাপে স্টেটমেন্ট পাবেন। তিন মাসের হিসাবকে তিন দিয়ে ভাগ করলেই এক মাসের হিসাব মিলে যাবে। অর্থাৎ, বিদ্যুতের বিল যে বেশি আসবে সে কথা একেবারেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন বিদ্যুৎ দফতরের বারাসত ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বাপ্পাদিত্য ঘোষ।
রিচার্জ শেষ হলেই কি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিদ্যুৎ সংযোগ? এই বিষয়ে তিনি জানান, ‘মাঝরাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। রিচার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও ৩০০ টাকা পর্যন্ত বকেয়া বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন সমস্ত গ্রাহক। তার পরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। তবে বকেয়া ৩০০ টাকা পার হয়ে গেলেও শনিবার, রবিবার বা কোনও ছুটির দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না। বিকেল ৫টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনও লাইন কাটা হবে না। শুধুমাত্র অফিস টাইমে লাইন কাটা হবে। আপনি যেই বুঝতে পারবেন যে বকেয়ার জন্য লাইন কাটা হয়েছে। আপনি অনলাইনে হোক লাইন অফিসে গিয়ে হোক, বকেয়া মিটিয়ে দিলেই সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তের মধ্যে অটোমেটিক আপনার বাড়িতে বিদ্যুৎ ফিরে আসবে। এখন আর কেউ গিয়ে লাইন জুড়বে সেসব কোনও ব্যাপার নেই।’
