DA নিয়ে রাজ্যের নতুন ছক? বঞ্চনার অভিযোগে ফুঁসছে কর্মীরা

West Bengal DA Issue

DA নিয়ে রাজ্যের নতুন ছক? বঞ্চনার অভিযোগে ফুঁসছে কর্মীরা

Srijita Ghosh

Published on:

শ্রীজিতা ঘোষ, কলকাতা: আর মাত্র ক’দিন। এরপরই শেষ হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্ধারিত সময়সীমা—রাজ্যের লক্ষাধিক সরকারি কর্মীকে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র (West Bengal DA Issue) ২৫ শতাংশ মেটানোর শেষ দিন ৩০ জুন। কিন্তু সময় ঘনিয়ে এলেও এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয়, সরকার আদৌ কর্মচারীদের এই পাওনা মেটাতে পারবে কি না।

এই অনিশ্চয়তার মাঝেই বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছে সরকারের ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ৪,০০০ কোটি টাকার ঋণ নিচ্ছে শুধুমাত্র ডিএ মেটানোর জন্য। আর এখানেই প্রশ্ন তুলছে কর্মচারীদের একাংশ—ঋণ নেওয়ার অজুহাতে সরকার কি ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি কর্মীদের ‘ভিলেন’ বানাতে চাইছে?

সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ সরকারি কর্মীদের সংগঠনের

এই প্রসঙ্গে ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার বলেন, ‘রাজ্য সরকারের ‘সাসপেন্স ও মিসলেনিয়াস অ্যাকাউন্ট’ হেডে ১১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিএ দেওয়ার জন্য ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং এটা একটা রাজনৈতিক চাল।’ তিনি আরও বলেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় বকেয়া ডিএ মেটাতে রাজ্য সরকারের মোট খরচ হবে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকা। বর্তমানে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে প্রয়োজন ১০,০০০ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ রাজ্যের কাছে টাকা থাকলেও ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে একপ্রকার নাটক করা হচ্ছে।

‘ভোটের আগে জনগণকে বোঝাতে চাইছে সরকার’ – অভিযোগ কনফেডারেশনের

কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ডিএ-এর মাত্র ২৫% দিতেই যদি ৪,০০০ কোটি টাকার লোন নিতে হয়, তাহলে বাকি ৭৫% দিতে কত লাগবে? আসলে ভোটের আগে মাননীয়া বোঝাতে চাইছেন—দেখো জনগণ, উন্নয়ন বন্ধ রেখে লোন করে কর্মীদের ডিএ দিচ্ছি। এই চালাকি কর্মচারি সমাজ বুঝে গিয়েছে।’

বকেয়া ডিএ (সম্পূর্ণ)- ৪০,০০০ টাকা+ কোটি

এই দফায় মেটাতে হবে (২৫%)- ১০,০০০ টাকা+ কোটি

সরকারের ঋণ নেওয়ার অঙ্ক- ৪,০০০ কোটি টাকা (RBI-এর মাধ্যমে)

দাবি করা কোষাগার তহবিল- ১১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা (মতান্তরে)।

সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন

সরকার কি আদৌ অর্থের ঘাটতির কারণে ঋণ নিচ্ছে, না কি এটি একটি জনমত তৈরির রাজনৈতিক চাল? সরকারি কর্মচারী মহলের দাবি অনুযায়ী, রাজ্যের অর্থভাণ্ডারে প্রয়োজনীয় তহবিল থাকলেও ইচ্ছাকৃতভাবে কর্মীদের দায়ী করে সরকার ‘উন্নয়ন থেমে যাচ্ছে’ এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে সাধারণ জনগণের কাছে।

রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সামনে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডিএ ইস্যু আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সময়সীমা ঘনিয়ে আসছে, চাপ বাড়ছে প্রশাসনের ওপরও। এখন দেখার, ৩০ জুনের মধ্যে সরকার তার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারে কি না, নাকি আন্দোলন-আইনি লড়াইয়ের দিকে এগোবে সরকারি কর্মী সংগঠনগুলি।

সঙ্গে থাকুন ➥