শ্রীজিতা ঘোষ, কলকাতা: আপনি কি পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মী? বকেয়া ২৫ শতাংশ DA (মহার্ঘ ভাতা) পাওয়ার আশায় দিন গুণছেন? তাহলে আপনার জন্য এক দুঃসংবাদ নিয়ে এলাম (WB 5th Pay Commission DA Arrear Update)। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, আগামী ২৭ জুনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বকেয়া ২৫% DA পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সরকার নাকি নতুন এক জটিলতার মুখে পড়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৬ সালের আগের সরকারি কর্মীদের বেতনের হিসেব-নিকেশ সংক্রান্ত পুরনো নথিপত্রই নাকি খুঁজে পাচ্ছে না। ফলে জটিলতা আরও বাড়ছে। এ নিয়ে প্রশাসনিক মহলে উঠছে প্রশ্ন — তবে কি DA আর পাওয়া হবে না?
নথির অভাব, হিসেব অজানা
প্রসঙ্গত, ২০১৫-১৬ সাল নাগাদ রাজ্য অর্থ দফতর ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (HRMS) চালু করে। এর আগে পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি কর্মীদের (Government Employee) বেতন সংক্রান্ত যাবতীয় হিসেব ম্যানুয়ালি রাখা হত, যা ডিজিটাল আকারে সরকারের হাতে নেই বলেই সূত্রের খবর। ফলে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে নিযুক্ত প্রায় ১০ লক্ষ কর্মীর সার্ভিস বুক ধরে ধরে আবার হিসেব করতে হবে, যা এককথায় প্রায় অসম্ভব কাজ — বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটা একেবারেই অসম্ভব বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
এখনও অনিশ্চয়তা
সূত্রের খবর, বকেয়া DA মেটানোর জন্য রাজ্য ইতিমধ্যেই নিলামের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলেছে। কিন্তু সেই টাকা আদৌ সময়মতো কর্মীদের হাতে পৌঁছাবে কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বড়সড় অনিশ্চয়তা। প্রশাসনিক সূত্র বলছে, সময়সীমা পূরণের জন্য রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন জানাতে পারে।
সরকারি কর্মীদের হতাশা
এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য হারাচ্ছেন বহু সরকারি কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে DA-র দাবিতে আন্দোলন করেছেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আশার আলো দেখলেও এখন আবার অন্ধকার ঘনাচ্ছে বলেই অভিযোগ কর্মী সংগঠনগুলির। এক কর্মচারীর কথায়, ‘DA আমাদের অধিকার। সরকার যদি হিসেব না রাখতে পারে, তার জন্য কেন আমাদের ভোগান্তি?’
সরকার কী বলছে?
এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও লিখিত বিবৃতি না এলেও, নবান্ন সূত্রে খবর, অর্থ দফতর ও কর্মিবর্গ দফতর চূড়ান্ত আলোচনায় বসেছে। খুব দ্রুতই তারা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ ঠিক করবে।
২৭ জুনের (Ratha Yatra) মধ্যে বকেয়া DA মেটানো সম্ভব না হলে আবারও আদালতে গড়াতে পারে বিষয়টি। সরকারি কর্মীরা এখন তাকিয়ে রয়েছেন নবান্নের দিকে — আদৌ মিলবে কি তাঁদের প্রাপ্য?
