নিউজশর্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র দিঘা(Digha)। যত দিন যাচ্ছে দিঘার জনপ্রিয়তা ততই বেড়ে চলেছে। প্রত্যেক বছর কয়েক লক্ষ পর্যটক দিঘা ভ্রমণ করতে আসেন। এই মুহূর্তে দিঘার সৌন্দর্য অনেক বদল ঘটেছে। আগের তুলনায় এই সমুদ্র সৈকতকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলছে প্রশাসন। তেমনি এক আকর্ষণীয় জায়গা হল ‘সম্প্রীতি নগর'(Sampriti Nagar)। একেবারে সম্প্রীতির চাদরে মোড়া রয়েছে এই সম্প্রীতি নগর।
দিঘার পাশে রামনগরের আশেপাশেই গড়ে উঠেছে এই সম্প্রীতি নগর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(CM Mamata Banerjee) এই জায়গার নাম দিয়েছেন। এখানে মসজিদের পাশে একই আঙিনায় দুর্গা মন্দির রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ মূলত মসজিদে একদিকে নামাজ ও অপরদিকে মন্দিরের ঘন্টার ধ্বনি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার জন্য। এখানে দুই ধর্মের মানুষের সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। মন্দির এবং মসজিদের মাঝখানের দূরত্ব রয়েছে মাত্র দশ ফুট।
এখানে দুর্গোৎসব, ঈদ, মহরম ইত্যাদি অনুষ্ঠানের সাথে সাথেই মেলা হয়। দুই ধর্মের এই মেলবন্ধন দেখে মুখ্যমন্ত্রী এই জায়গার নামকরণ করেছেন সম্প্রীতি নগর। এই জায়গাটি কোথায়? তাহলে এই জায়গাটি সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাই। দীঘা থেকে মাত্র দুটো বাস স্টপ দূরে, রামনগরের ঠিকরায় এই সম্প্রীতি নগর অবস্থিত। এখানে দুটি ধর্মের মানুষের অপরূপ মেলবন্ধন লক্ষ্য করা যায়। এখানে একটি হিন্দু মন্দির এবং এটি মসজিদ পাশাপাশি রয়েছে।
এই মন্দিরটি জাগরণ সংঘ এবং মসজিদটি শাহজাহান মসজিদ নামে পরিচিত। জানা গিয়েছে, এই সুন্দর জায়গাটি গড়ে তোলার জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছে। জাগরণ সংঘের দুর্গাপুজো ৮০ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে আবার অন্যদিকে মসজিদটির বয়স ১০০ বছর ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই সম্প্রীতি নগর গড়ে উঠেছে জাগরণ সংঘের সম্পাদক তথা দেজ পাবলিকেশনের কর্ণধার সুধাংশু শেখর দের উদ্যোগে।
একদিকে মসজিদ তৈরির কাজ যেমন চলছে তেমনি মন্দির তৈরির কাজও চলছে। ঠিকরা মোড়ে সম্প্রীতি নগর লেখা বিশেষ তোরণ তৈরি করা হবে। আশেপাশের সমস্ত গ্রামগুলো প্রায় ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষজন সারা বছর এই মন্দির এবং মসজিদ এসে উৎসবে আনন্দে মেতে ওঠে। যদিও পুরোনো মন্দির ভেঙে ৮৫ ফুটের নতুন স্থায়ী দূর্গা মন্দির তৈরি করা হচ্ছে যার কাজ প্রায় শেষের পথে। পূর্ব মেদিনীপুরের এই বিরল দৃশ্য সম্প্রীতির দৃশ্য দেখতে আসে অনেক পর্যটকেরা।
মুখ্যমন্ত্রী যখন এর আগে পূর্ব মেদিনীপুর সফরে গিয়েছিলেন তার সামনে এই জায়গার কথা উঠে আসে। তখন দুই ধর্মের অনুষ্ঠান এক জায়গায় হচ্ছে এই কথা শোনার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর পর্যটনমন্ত্রীকে সেখানে পাঠান। আর তিনি পুরো জায়গাটি ঘুরে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী এই জায়গাটির নাম দেন সম্প্রীতি নগর। এবার দীঘা ঘুরতে গেলে এত সুন্দর একটি জায়গা, ঢুঁ মারতে কিন্তু একদম ভুলবেন না।