দক্ষিণী চলচ্চিত্র সুপার স্টার পুনিথ রাজকুমারের অকাল প্রয়াণে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছিলেন সকলে। এক কথায় এই মহাপ্রয়াণ মানতে পারেনি কেউ। কিভাবে তরতাজা একটি প্রাণ আচমকা শেষ হয়ে গেল, তা শুনে অনেকেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তবে একজন ভালো অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন দুর্দান্ত মনের মানুষ।
১৮০০ টি শিশুর শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে তৈরি করেছিলেন ২৬ টি অনাথ আশ্রম,১৬ টি গোশালা, ৪৬ টি বিনামূল্যে স্কুল। চিরকাল অন্যদের সাহায্য করে তিনি শান্তি পেতেন। জীবদ্দশায় এতগুলি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে ইহলোক ত্যাগ করে পরলোকে যাওয়ার সময়ও চারজনের জীবনে আলো দিয়ে গেলেন তিনি।
২৯ অক্টোবর আচমকা জিমে ওয়ার্ক আউট করার সময় হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। এরপরই হাসপাতালে তড়িঘড়ি ভর্তি করানো হলেও বাঁচানো যায়নি অভিনেতাকে। হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিনয় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বিখ্যাত এই অভিনেতা মৃত্যুর আগেই তার চক্ষুদানের অনুমোদন দিয়ে গিয়েছিলেন, যার ফলে চারজন আলো দেখতে পেলেন এই পৃথিবীর।
কিন্তু দুই চোখ দিয়ে কিভাবে চারজনের চক্ষুদান করা গেল? এমন প্রশ্ন নিশ্চয়ই আপনার মনেও জেগেছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে হল এই অসম্ভব কার্য সম্ভব। আসলে অভিনেতার একটি চোখ দুটি রোগীকে দেওয়া হয়েছিল। কর্নিয়ার অপরের এবং ভেতরের স্তর আলাদা করে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল ফলে কর্নিয়ার মোট চারটি অংশ অপসারণ করা সম্ভব হয়। এভাবে চারজন কর্নিয়ার অভাবী রোগীদের মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয় এই কর্নিয়া।
যে সমস্ত রোগীদের কর্নিয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয় তাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। নারায়ন নেত্রালয়ের ৫ জন চিকিৎসকের একটি দল এই চক্ষু প্রতিস্থাপন করেছেন। অভিনেতা পুনিথ কুমার তাঁর পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য যিনি চক্ষু দান করলেন। এর আগেও পুণিথ কুমারের বাবার চক্ষুদান করে গিয়েছিলেন ২০০৬ সালে।