দিঘা, পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। সারাবছরই দিঘায় পর্যটকের সমাগম অব্যাহত থাকে তবে পর্যটকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এখন নতুন ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতারণার ক্ষেত্রেও ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে দিঘা। আর এবার জানা যাচ্ছে, নিউ দিঘা থেকে অনলাইন প্রতারণা চক্র চালানোর জেরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে বিহারের দুই প্রতারক।
পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার
প্রথমে নিউ দিঘার রাস্তায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ দুজনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে তাদের আসল পরিচয়। ধৃতদের একজন বোধ কুমার, যিনি বিহারের নালন্দা জেলার সুন্দরপুর এলাকার বাসিন্দা। অপরজন, মনীষ কুমার, নালন্দার বরবিঘার বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এবং বিভিন্ন পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করত।
পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, ATM কার্ড সহ বেশ কিছু টেক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে। এসব সরঞ্জামগুলিকে বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশের মতে, প্রতারণার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারই এদের প্রধান অস্ত্র।
প্রতারণার পদ্ধতি এবং চক্রের অন্যান্য সদস্য
প্রাথমিক তদন্তে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে আরও জানা যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। কোন পদ্ধতিতে এবং কীভাবে এই প্রতারণা চক্র কাজ করত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলা হয়েছে এবং ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হয়েছে। পুলিশের এই সফল অভিযানে সৈকতনগরী দিঘায় অনলাইন প্রতারণার চক্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে প্রতারণার বাড়বাড়ন্ত
পশ্চিমবঙ্গ সহ সমগ্র ভারতে বিহার থেকে আসা প্রতারকদের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিগত কয়েক বছরে বিশেষ করে বাংলায় বিহারের প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা গুরুতর সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আর দিঘার মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলোও এখন এই ধরনের অপরাধের লক্ষ্যবস্তু হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
পুলিশের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দিঘায় পুলিশের তৎপরতা ও প্রতারণা চক্রের সাথে যুক্ত যুবকদের গ্রেফতার একটি বড় পদক্ষেপ ঠিকই। তবে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে ও অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ প্রযুক্তির সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনই এর অপব্যবহারও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। পুলিশের মতে, এই ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে আরও শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং সৈকতনগরী দিঘা সহ অন্যান্য অঞ্চলেও নজরদারি বাড়ানো হবে।