নারী মাত্রই তাতে মাতৃত্বের অনুভূতি রয়েছে। তা মানুষ হোক বা অন্য কোনো প্রাণী। জন্মসূত্রেই কিছু ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতা পেয়ে যায় এক নারী। তবে অধিকাংশ প্রাণীর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শৈশব থেকে যে তাদের বড় করে তুলেছে, তাকেই মা হিসেবে চিনেছে তারা (Unconventional relationships)। আজকের প্রতিবেদনেও পাঠকদের জন্য এমনই এক বিরল মাতৃত্বের কথা তুলে এনেছি।
মাতৃত্বের কাছে হার মেনেছে সব চিরাচরিত নিয়ম। এমনকি হার মানিয়েছে খাদ্য ও খাদকের চিরাচরিত সম্পর্ককেও। সম্প্রতি এমনই এক বিরল ঘটনা দেখা গেছে, চিনের এক চিড়িয়াখানায়। এক খাদ্য তার খাদককে আদর যত্ন করে বড়ো করে তুলছে। শুধু তাই নয়, খাদ্যের গর্জনের কাছে জব্দ হয়ে গিয়েছে খাদকের গর্জনও।
চিনের এক চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচায় দিব্যি হেঁটেচলে বেড়াতে দেখা গিয়েছে একটি কুকুরকে। শুধু তাই নয়, কুকুরের গর্জনে আদুরে ভঙ্গিতে সাড়া দিতে দেখা গিয়েছে বাঘগুলিকেও। আসলে একটাসময় কিছু বাঘের বাচ্চাকে একটু কুকুরের খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যতদিন না বাঘ বাচ্চাগুলি বড়ো হচ্ছে ততদিন কুকুরের কাছেই থাকবে তারা।
পরে বাঘগুলি বড়ো হয়ে উঠলেই তাদের খাঁচা থেকে বের করে নেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়। কারণ বাঘেরা একবার মাংসের স্বাদ পেয়ে গেলে কুকুরটিকে মেরে ফেলতে পারে। তাই কিছুদিনের জন্য একটি গোল্ডেন রিট্রিভার প্রজাতির কুকুরকে বাঘের খাঁচায় রেখে দিলেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। তারপর থেকেই সেই সেই গোল্ডেন রিট্রিভারের কাছেই বড় হয়ে উঠেছে বাঘগুলি।
সেই থেকে বাঘ শাবকগুলিকেও পরম যত্নে বড়ো করে তুলছিল গোল্ডেন রিট্রিভারটি। বাঘগুলি পূর্ণবয়স্ক হয়ে উঠলে চিড়িয়াখানার কর্মীরা খাঁচা থেকে বের করে নেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। আর এতেই ঘটলো বিপত্তি। বাঘগুলি কুকুরকে আক্রমণ করা তো দূর উলটে বিমর্ষ হয়ে পড়লো। প্রতিনিয়ত তাদের কুকুর মায়ের অনুপস্থিতি কষ্ট দিতে লাগলো তাদের।
আর মা কে কাছে না দেখে মুষড়ে পড়ে বাঘগুলি। এরপর বাঘেদের মন পরীক্ষা করার জন্য আবার সেই কুকুরটিকে পাঠিয়ে দেয় বাঘের খাঁচায়। আর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় বাঘগুলির মধ্যে। ‘মায়ের’ দেখা পেয়ে প্রচণ্ড খুশি হয় বাঘগুলি। বাঘগুলির কাছে রক্তের চেয়ে মাতৃত্বের স্বাদ অনেক বেশি তা বলাই বাহুল্য। গোল্ডেন রিট্রিভারের সঙ্গে তাদের এই বন্ধন সবকিছুর উপরে।